সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আমদানি কমিয়ে দেশেই কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সচিবালয়ে ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা-২০২০ এর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির প্রারম্ভিক বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক মেশিন বিদেশ থেকে আমদানি করি। আমাদের লক্ষ্য আমদানি যাতে কমিয়ে আনতে পারি। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মেশিনে খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করতে পারি। বাংলাদেশেই যাতে আমরা বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র তৈরি করতে পারি, এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
‘প্রথম কাজ হলো আমাদের যন্ত্রগুলো মাঠে নিয়ে যাওয়া, দ্বিতীয় কাজ এগুলো যাতে আমরা পর্যায়ক্রমে স্থানীয়ভাবে তৈরি করতে পারি। এটার সম্ভাবনাও অনেক, ক্ষেত্রটি অনেক বড়। আমরা বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা বলি। সেটা কৃষিতেই দেখতে পারি। কৃষি যন্ত্রপাতির কারখানা, রিপেয়ারিংয়ের কারখানা হলে অনেক আয় করতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে একটি নতুন বিপ্লব হবে।’
Advertisement
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিকে আরও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কৃষিকে লাভজনক করতে চাচ্ছি যাতে কৃষিপেশায় থেকে দেশের কৃষককুল যারা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে তারা যাতে উৎপাদন করে যথেষ্ট মুনাফা করতে পারে। যাতে তাদের জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি পায়।’
তিনি বলেন, ‘একসময় খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল কৃষি উৎপাদনের মূল লক্ষ্য। আজ এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আজকে লক্ষ করছি উদ্যোগী কৃষক ও অনেক তরুণ শিক্ষিত ছেলে অনেক অপ্রচলিত ফসল বাংলাদেশে উৎপাদন করছে। এটা করে অনেকে লাভবান হচ্ছে। আমরা তাদের যদি প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহিত করতে পারি তবে কৃষিকে আরও বেশি লাভজনক করা সম্ভব।’
‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করলে শ্রমিকের প্রয়োজন কমে যাবে, এটা ঠিক। তবে আয় বাড়লে অন্য জায়গায় তাদের কর্মসংস্থান হবে।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষি আধুনিকীকরণের দুটি দিক, একটি হলো যান্ত্রিকীকরণ। যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আমরা খরচ কমিয়ে আনব। দ্বিতীয়ত হলো বাণিজ্যিকীকরণ, যাতে লাভজনকভাবে বিক্রি করা যায়।’
Advertisement
সবাই মনে করছে যান্ত্রিকীকরণ মানে ধান কাটা- মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্র বলেন, ‘যান্ত্রিকীকরণ হলো জমি চাষ করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফসল লাগানো, কর্তন ও মাড়াই করা। আমরা লক্ষ করছি সার্বিক কৃষিটা যান্ত্রিকীকরণের দিকে যাচ্ছে।’
কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের অনেক সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটি আমরা করতে চাচ্ছি। সে জন্য আমরা তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট করেছি। প্রজেক্টের মাধ্যমে ৫৩ হাজার যন্ত্রপাতি আমরা আমরা দেব। এখানে নানান যন্ত্রপাতি থাকবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় কৃষিযন্ত্র আমদানিকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
আরএমএম/বিএ/এএসএম