দেশজুড়ে

জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, আতঙ্কে হাতিয়ার ৭ লাখ বাসিন্দা

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও পূর্ণিমায় সৃষ্ট জোয়ারে গত দুদিনে নদ-নদীতে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। জোয়ারের তোড়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার আটটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হন হাজারও মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও কিছু বাঁধ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরেও জোয়ার আসা শুরু হয়েছে। এতে ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কায় রয়েছে হাতিয়ার সাত লাখ অধিবাসী।

উপজেলার সুখচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, ওই ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অধিকাংশ এলাকা ভাঙা। বাকি অংশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও সুখচর, সোনাদিয়া, তমরুদ্দি ইউনিয়নের বাঁধগুলোও চরম ঝুঁকিতে আছে।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের লোকজন জানান, তারা পৈতৃকভাবে মৎস্য শিকারি। ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, বুলবুল এবং আম্ফানের আঘাতে নিঃস্ব হয়ে গেছে এ অঞ্চলের মানুষ। এখানে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সরকার এ ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

Advertisement

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, ‘তার ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামে ৫৭ হাজার লোকের বসবাস এই ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় চরম ঝুঁকির মধ্যে তাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে।

তবে স্থানীয় বনবিভাগ সূত্র জানায়, নিঝুম দ্বীপকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করায় এখানে বাঁধ নির্মাণ করা হবে সাংঘর্ষিক। কারণ বনের মধ্যে যেভাবে বসতি গড়ে উঠছে তাতে অল্পকিছু দিনের মধ্যে হরিণসহ বন্য প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন জানান, হাতিয়ার ৯ ইউনিয়নে ১২০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আছে। এর মধ্যে চর ঈশ্বর, নলচিরা ও সুখচর ইউনিয়নে সাড়ে ছয় কিলোমিটার বাঁধ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে আরও সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উপজেলার তমরউদ্দি, সুখচর ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাতিয়া উপজেলার মাস্টার প্ল্যানে নিঝুমদ্বীপের বেড়িবাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা আছে।

Advertisement

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, করোনাকালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জেলায় উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়ায় দূরত্ব বজায় রেখে দুর্গত মানুষদের আশ্রয়ের পদক্ষেপ নিয়েছি। ইতোমধ্যে হাতিয়াসহ সব উপজেলায় পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এসজে/এএসএম