ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খুলনার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ-শাকবাড়িয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। এতে তলিয়ে গেছে সেখানকার অন্তত ৪০ গ্রাম। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানিতে বাড়ির আঙিনা, রাস্তা-ঘাট, মাছের ঘের ও ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। উপজেলার আংটিহারা, মঠবাড়ি, গোবরা ঘাটাখালী, কয়রা সদরের তহশিল অফিস সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, দশহালিয়া, কাটকাটা, কাশির হাটখোলা, কাটমারচর, ২ নম্বর কয়রা, ৪নম্বর কয়রা, পবনা, তেঁতুল তোলার চর, কাশির খালের গোড়া, হোগলা, উত্তর বেদকাশি, গাতির ঘেরী, শাকবাড়িয়া, সুতির অফিস, নয়ানি, খোড়ল কাটি, জোড়শিংসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে। এতে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদী তীরবর্তী ৪০টির বেশি গ্রামে পানি প্রবেশ করছে।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের (বাঁধ ভাঙন) বাসিন্দা আবু সাইদ খান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমারা খুবই আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে রাতে। এলাকার মানুষ ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকেন। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়।
কলেজ ছাত্র মহসিন জানান, মহারাজপুর ইউনিয়নের পবনা ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙছে। আজ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরও বাড়বে। আমারা সবাই আতঙ্কে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
Advertisement
উত্তর বেদকাশী ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নূরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, মঙ্গলবার রাতে জোয়ারে ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে। আজ (বুধবার) বুধবার দুপুরে শাকবাড়িয়া নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ২০ মে আম্ফানের আঘাতে বেড়িবাঁধ ভেঙে সদর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। সে ক্ষতি মানুষ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বলেন, দক্ষিণ অঞ্চলের নদ-নদীতে দুই থেকে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০ হাজার জিও ব্যাগ ও ৩০ হাজার সিনটেথিক ব্যাগ মজুদ রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/আরএইচ/এএসএম