পুলিশের হাতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ জর্জ ফ্লয়েডের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি আইনের সংস্কার দাবি করেছে তার পরিবার। মঙ্গলবার তারা হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানান। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের আরও কয়েকজন সদস্য।
Advertisement
মঙ্গলবার ফ্লয়েডের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন আইনটি কার্যকরে বাইডেনের স্বাক্ষর করার কথা ছিল। কিন্তু বাইডেন সেখানে স্বাক্ষর করেননি। যদিও ফ্লয়েডের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বাইডেন বলেন, তিনি আইনটির সংস্কারকে সমর্থন করেন।
এদিকে, জর্জ ফ্লয়েডের বোন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বৈঠক বর্জন করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, স্বাক্ষর না দিয়ে বাইডেন নিজের দেয়া ‘প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন’। পরে তিনি মিনেসোটায় প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেন। এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিল হাজারো মানুষ। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিনেসোটা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি রাজ্যে জর্জ ফ্লয়েড স্বরণে র্যালিতে অংশ নিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
জর্জ ফ্লয়েড ছিলেন আফ্রিকান আমেরিকান, যিনি গত বছরের ২৫ মে মিনেসোটা শহরের মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় মারা যান। পরে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের সঙ্গে পুলিশি আরচরণের প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ, যা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন নামে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement
জর্জ ফ্লয়েড ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় চাকরি হারান। তিনি জাল নোট ব্যবহার করে সিগারেট কেনার অভিযোগে আটক হন। আটকের সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু গেড়ে বসে থাকেন। এ অবস্থাতেই ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, ‘প্লিজ, আই ক্যান নট ব্রিথ’ ( দয়া করুন, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না)। পরে এ লাইনটিও বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় শ্বেতাঙ্গ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ১২ সদস্যের জুরি বোর্ড। গত মাসে এ রায় দেয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ফ্লয়েডকে হত্যায় পুলিশ কর্মকর্তা চাওভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়েছে। ফলে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে চাওভিনকে। এ মামলার রায় প্রকাশকে যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
এএমকে/টিটিএন/এমকেএইচ
Advertisement