ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
Advertisement
পুলিশ বলছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ মে) শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, ‘সোমবার (২৪ মে) তাদের শাহবাগ থানায় আনা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যাবে।’
Advertisement
জানা গেছে, নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর গত ২৩ মে ঢাবির তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং টিএসসিভিত্তিক সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাওয়া যায়।
ওইদিন শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক রইচ উদ্দিন জাগো নিউজকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছিলেন, ‘গত ১৫ মে রাতেই একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়েছিলাম। আজ জানতে পেরেছি এটি হাফিজের মরদেহ।’
মৃত্যুর বিষয়ে হাফিজের বন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম প্রান্ত এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘হাফিজ আর নেই। কিছুক্ষণ আগে মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে। যারা মরদেহ নিয়ে এসেছিল তারা বলছে, শহীদ মিনারের সামনে ডাব বিক্রেতার দা নিয়ে নিজের গলায় আঘাত করে টিএসসির দিকে দৌড় দেয় হাফিজ। কিছুদূর গিয়ে পড়ে যায় সে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সেখানকার লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং ঢামেকের মর্গে মরদেহটি অজ্ঞাতনামা হিসেবে রাখা হয়। সঙ্গত কারণেই মরদেহের ছবি শেয়ার করছি না। প্রক্টর স্যার ঢাকা মেডিকেলে যাচ্ছেন মরদেহ আনার জন্য। তার পরিবারকে জানানো হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আশা করছি।’
Advertisement
ফেসবুক পোস্টে নিহত হাফিজের বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উল্লেখ করেন, হাফিজুর রহমান ঈদের পরদিন ১৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ওই দিন কার্জন হল থেকে রাত ৮টায় মায়ের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনালাপের পর থেকে ৯ দিন ধরে তিনি নিখোঁজ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় এ বিষয়ে জিডি করা হয়েছে, শাহবাগ থানায়ও অবহিত করা হয়েছিল বলে তারা জানান।
এদিকে, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে দাবি করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সোমবার (২৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য হাফিজুরের মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে তার পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান হাফিজুরের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন।
এছাড়া উপাচার্য বিষয়টি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়ার জন্য ঢাবি প্রক্টরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এএএইচ