খেলাধুলা

২৪৬ রানে থেমে গেল বাংলাদেশের ইনিংস

আবারও টপঅর্ডারের ব্যর্থতা, আবারও মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াই; প্রথম ওয়ানডের গল্পটাই যেন দ্বিতীয়বার লিখল বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টিতেও বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দিলেন মুশফিক, যাকে সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

Advertisement

মুশফিকের ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ দল পেয়েছে ২৪৬ রানের সংগ্রহ। ইনিংসের ৪৯তম ওভারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে মুশফিক খেলেছেন ১২৭ বলে ১২৫ রানের ইনিংস। সিরিজে সমতা ফেরাতে শ্রীলঙ্কাকে করতে হবে ২৪৭ রান।

ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ১৫ রানের মধ্যে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসান সাজঘরের পথ ধরেন।

অথচ ইনিংসের প্রথম ওভারে ইসুরু উদানাকে তিন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম। কিন্তু দুশমন্ত চামিরার পরের ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।

Advertisement

ওভারের প্রথম বলেই দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে তামিমকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন চামিরা। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিয়ে নেয়, তাতেই বাজিমাত। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরেন ৬ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে।

ওই ওভারেরই চতুর্থ বলে চামিরার আরেকটি ইনসুইঙ্গারে পরাস্ত হন সাকিব আল হাসান। এবার আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে আঙুল তুলে দেন, আউট বুঝতে পেরে রিভিউ নেননি সাকিব (০)।

অফফর্মে থাকা লিটন আজ বেশ দেখেশুনে খেলছিলেন। কিন্তু ২৫ রানে পৌঁছার পর ভুল শট খেলে বসেন। সান্দাকানকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন ডানহাতি এই ওপেনার। এরপর দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেনও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১০ রানেই আউট হন এই অলরাউন্ডার।

দলীয় ৭৪ রানেই ৪ উইকেট হারানোর পর প্রথম ম্যাচের মতো আবারও দলের হাল ধরেন ব্যক্তিগত সম্পর্কে দুই ভায়রা ভাই মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৮৭ রান। হাফসেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও ৪১ রানে সাজঘরে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ।

Advertisement

এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব (৯ বলে ১০) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (২ বলে ০)। ফলে সকল দায়িত্ব গিয়ে বর্তায় মুশফিকের কাঁধে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ঠিক পথেই ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছয় ম্যাচের মধ্যে তুলে নেন পঞ্চম ফিফটি।

কিন্তু তার সেঞ্চুরিটি হওয়ার আগেই দুই দফায় বন্ধ হয় খেলা। প্রথমে ৪২তম ওভারের প্রথম বল হওয়ার পর থেমে যায় খেলা। তখন ২৫ মিনিট বন্ধ থাকার আবার শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং। বৃষ্টি নামার আগে খেলা ৪১.১ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান করে বাংলাদেশ দল, মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে।

পরে দ্বিতীয়বার বৃষ্টি নামার আগে মাত্র ১৪ বল খেলা হয়। সেই ১৪ বলে বাংলাদেশ করে ১৭ রান, মুশফিক পৌঁছে যান সেঞ্চুরির আরও কাছে। দুই চারের মারে পৌঁছে যান ৯৬ রানে। অপরপ্রান্তে সাইফউদ্দিন খেলছিলেন ৮ রান। এ দফায় খেলা বন্ধ থাকে ৩৫ মিনিট।

দ্বিতীয় দফা বিরতির পর সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে একদমই সময় নেননি মুশফিক। চামিরার করা ৪৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিন অঙ্কে পৌঁছান তিনি। সেঞ্চুরি পূরণ করার পর আরও আক্রমণাত্মক হন মুশফিক। এ সময়ের মধ্যে ১২ বলে করেন ২২ রান।

শেষদিকে অপরপ্রান্তে সঙ্গী না থাকায় একাই টেনে নিতে হয় দলকে। অষ্টম উইকেটে সাইফউদ্দিনের সঙ্গে জুটি হয় ৪৮ রানের। রানআউট হওয়ার আগে সাইফ করেন ১১ রান। তিনি ফিরে যাওয়ার পর দলের ইনিংস একাই টেনে নেন মুশফিক। যিনি পনেরো ইনিংস পর সেঞ্চুরি করে দলকে এনে দিয়েছেন লড়াই করার মতো সংগ্রহ।

শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন লাকশান সান্দাকান ও দুশমন্ত চামিরা। এছাড়া ইসুরু উদানার শিকার ২ উইকেট।

এসএএস/আইএইচএস/