ভ্রমণ

যে দেশের নারীর প্রেমে পাগল সব পুরুষ!

মোস্তফা মহসীন

Advertisement

কোনো এক আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকার গুলশান ২ নম্বরে অবস্থিত জাপান দূতাবাসে ভিসা অফিসারের মুখোমুখি হলাম। ভিসা অফিসার তন্নতন্ন করে আমার দেয়া সব কাগজপত্র পরীক্ষা করলেন। প্রশ্ন ছিলো- কতোদিন ধরে আমি কোর্ট প্র্যাকটিস করছি?

বাংলাদেশে একজন ল’ গ্রাচুয়েটকে আইনজীবি সনদ পেতে গেলে কি কি ধাপ অতিক্রম করতে হয়? কিছুটা সন্তোষজনক উত্তর পাবার পর ভিসা অফিসার পাসপোর্ট রেখে দেন আর নির্দিষ্ঠ দিনে আসতে বলেন। ভিসা অফিসারের সদর্থক উত্তর আমাকে জানিয়ে দেয় আবেদনের পরিণতি।

মাঝখানে কয়েকটি ফাঁকা দিন। আনন্দের ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে নীলাকাশে ভাসিয়ে দিই ইচ্ছে ফানুস! যথাসময়ে থাই এয়ারলাইন্সের টিকিট কেটে রওয়ানা হই স্বপ্নময় জাপানের পথে! থাই এয়ার লাইন্সের এয়ার হোস্ট্রেসদের দ্বারা আপ্যায়িত হতে হতে পৌঁছে যাই মাত্র ২ ঘণ্টায় যাত্রাবিরতির মঞ্চে। এবার ব্যাংকক টু টোকিও কানেকটিং ফ্লাইট।

Advertisement

যাত্রাবিরতিতে ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সুবিশাল লবিতে ঘুরতে ঘুরতে ইমোতে কথা বলি, নারিতা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যিনি আমার জন্য অপেক্ষা করছেন, সেই দেশি সুহ্নদ কাজল মজুমদারের সঙ্গে। এদিকে তিনি এবং জাপানি সহধর্মীনী জানতে উদগ্রীব- কখন আমার উড়োজাহাজ অবতরণ করবে; নারিতা বিমানবন্দরে?

ভোর ৬টায় পৌঁছে যাই স্বপ্নভূমি জাপানে। যেখানে আমি পৃথিবীর ৯০টি দেশের একজন হয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবিদের সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি, বাংলাদেশের হয়ে। টোকিওর বিখ্যাত পাঁচতারকা হোটেল ‘হোটেল হিলটন’ সিনজুকি আমার সম্মেলন ভেন্যু। থাকার বন্দোবস্ত এই হোটেলে থাকলেও প্রিয়জনদের আবদার ফেরানো দায়; তাই আমার থাকার বন্দোবস্ত হলো প্রবাসীদের সঙ্গে।

প্রিয়জন কাজলদার বাসায়। টোকিওর কিংসশিখো, টোকিওর বৃহত্তম বাণিজ্যিক এলাকা। কিংসশিখো যেতে হলে আপনাকে জেআর সবুলাইন (টোকিওর মেট্রো ট্রেন) চড়ে হলুদ রঙের ট্রেনটিতে উঠতে হবে। সময় সচেতন জাপানিরা যে বর্ণময় জাতিও, তা তাদের পোশাক, আভিজাত্য আর ট্রেনে চড়া দেখেই বোঝা যায়। যেমন অঞ্চলভেদে এদের ট্রেনের রংটা আলাদা। ফলে ভিন্নভাষী মানুষের বিভ্রান্তিতে পড়ার সুযোগ কম!

কিংসশিখো এটি টোকিওর অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা, তাই চারপাশের এলাকা মূলত শপিং ভিত্তিক। এ ছাড়াও আছে অসংখ্য নাইটক্লাব, আর বার। কাজলদার সঙ্গে মধ্যরাতে বাংলাদেশের গল্প করতে করতেই একটি বারে ঢুকলাম। বারগার্ল এসে অভ্যর্থনা জানালো। টেবিলে টেবিলে দেখছি, আগন্তুকের রুচি অনুযায়ী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ ঢেলে দিচ্ছে। এই বারগার্লরা আবার সাদা চামড়ার দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া, রাশিয়া থেকে আগত। এখানে খদ্দেরকে যতো বেশি টেবিলে বসিয়ে রাখা যায়, তত লাভ!

Advertisement

বিশ্বে বিস্তর ইজ্জত আছে জাপানিজদের, অথচ দেশে ৪০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ বউকে লুকিয়ে ফুলে ফুলে মধু খায়! এমনও হয়েছে প্রমোদে মজে সারা মাসের মাইনে দিয়ে যায় বারগার্লদের। তাদের খুব পছন্দ সাদা চামড়ার পরনারী! বুড়ো এক জাপানিজ মাসায়ুকি ওজাকি, আমাকে বুক ফুলিয়ে জানালেন, তার প্রথম বউ ছিলেন এক রাশিয়ান, বছর খানেক ঘর-সংসার করার পরেই ডিভোর্স দিয়েছেন। তবুও স্মৃতি ওকে তাড়িত করে প্রতিক্ষণ, তাই মানিব্যাগে যত্ন করে রেখেছেন প্রথম বউয়ের ছবি।

জাপান সম্পর্কে বাংলাভাষীদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জাপান ভ্রমণ। বিশ্বকবি ১৯১৬ সালে জাপান ভ্রমণ করেন, আর তার সেই ভ্রমণ বিবরণী ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থরূপে প্রকাশের পরই বাংলার বিদগ্ধ সমাজে দেশটির নতুন পরিচিতি উঠে আসে। যা হোক ফিরে আসি বিষ্ময়কর জাপানে।

জাপানিদের সাথে আমাদের কিছু মিল রয়েছে। বলা যায়, আমাদের মতো জাপানিরাও ভাত-খেকো! তাই বলে ওদের কেউ ভেতো-জাপানি বলে না! ভাত খেয়ে আমাদের মতো বোধ হয় ঘুমায় না; তাই ওদের ভুঁড়িটাও বাড়ে না! আমার সামনেই ইন্ডিয়ান হোটেলে এক জাপানি কী অনায়াস ভঙ্গিতে স্টিলের বাটিতে রাখা ১৫০ গ্রামের মতো আঁঠালো ভাত, একটি সেদ্ধ করা সাগরের মাছ, সঙ্গে পর্যাপ্ত সস, এক টুকরো বেগুন, কিছু শসা-টমেটো সালাদ চপ স্টিক দিয়ে গিলে নিল!

কেউ কেউ খাবার শেষে জুসও নিচ্ছেন; সেই তালিকায় আছে দই, আইসক্রিমও। পাড়ার মোড়ে মোড়ে আছে অল্প পয়সার কয়েনের সাহায্যে নানা জাতের সফট ড্রিংকস, বিয়ার গলধ:করণের সুবিধা। পানির দামের চেয়েও অনেক সস্তা এই সমস্ত বিয়ার। মনে হলো, বহুকাল ধরে জাপানিরা পানির পরিবর্তে বোধ হয় বিয়ারই পান করে যাচ্ছেন! আগন্তক হয়ে থাকার মধ্যে এক ধরনের সুপ্ত আনন্দ থাকে। জীবনকে ভীষণ উপভোগ্য করে তুলতে এই যেমন বিদেশ-বিভুঁইয়ে ইচ্ছে করেই পথ হারিয়ে ফেলি! ঢুকে পড়তে জাপানি তরুনীদের হ্নদয়-নগরে!

যে অচেনা নারী আমাকে দেখে এক গাল হাসে, তার কাছে ছুটি নীড়-হারানো পাখি আমি। ঠিকানা খুঁজে পেতে পরিচয়পর্ব সারি। মুগ্ধতা মাখানো সারল্যে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন, মিচিকো সাকুরা; ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানে অধ্যয়নরত ছাত্রী। ভরা যৌবন যেন উথলে পড়ছে পরিপুষ্ঠ দেহ থেকে। লাল গালের উপর কালো তিল অপরুপা লাগছে। ক্ষীণ কটি, উদ্ধত স্তন আর দস্তানায় জড়ানো পেলব হাত ভারতীয় উপমহাদেশের লোকজনকে লোভি করে তোলার জন্য বলতে হবে যথেষ্ঠ।

উন্নত জীবন-যাপন সত্ত্বেও জাপানিদের মধ্যে অহং এর প্রবেশ অত্যন্ত কম। বৌদ্ধরা এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও মানবধর্মকে এরা বড় করে দেখে। আমাদের মতো ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কোথাও দেখলাম না। রাষ্ট্র কাঠামোর ভেতর ধর্ম যে অচল সেই প্রসঙ্গে আলাপ করতে করতেই মিচিকো ওসাকা জানায়, এখানে ধর্মীয় উৎসবের চাইতেও বড় নববর্ষ উদযাপন।

নতুন সুট-কোট-টাই-জুতো পড়ে পুরুষেরা উন্মাতাল হয়, নারীরা হাল ফ্যাশনের পাশ্চাত্য পোশাক পরে নাচ-গান, আনন্দ-খুনসুটিতে ভাসিয়ে দেয় দিনটাকে। পুরো টোকিও ঘুরলে আপনার কাছে নারীদের ব্যাপক উপস্থিতি দৃশ্যমান হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ব্যবসায়িক বুদ্ধির সঙ্গে শান্তির বাণী যোগ করে কর্মচঞ্চল এই নারীরাই এগিয়ে নিয়েছেন জাপানের অর্থনীতিকে।

বিমানবন্দর, স্টেশন, ফ্যাশন হাউস, কফি হাউস, হোটেল-মোটেল সর্বত্রই নারীদের ব্যাপক পদচারণা। জাপানি নারীরা আজ তাই দুনিয়াতে এক ব্রান্ডিং; যাদের আতিথ্য লাভের জন্য বিদেশি পর্যটক আর আমেরিকান পুরুষরা উন্মুখ। আর বাঙালি যুবক আমি তো আগে থেকেই জানি সেই প্রবাদবাক্য ‘আমেরিকান বাড়ি, চীনাখাবার, আর জাপানি বউয়ের শ্রেষ্ঠত্ব’!

আগেই জানা ছিলো, টোকিও স্কাই ট্রি বিশ্বের সর্বোচ্চ টাওয়ার। ২ সেপ্টেম্ভর বাংলাদেশে ঈদের দিন, প্রবাসীদের অনেকেই দেখলাম কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়েছেন। কিংসশিখোর স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের পর, আমি তা-ই টোকিও স্কাই ট্রি দেখার জন্য উন্মুখ হই। আমাকে সঙ্গ দেন কাজলদা এবং তার বন্ধু হক রোকন।

স্কাই ট্রি অভ্যর্থনায় লিফলেট পড়ে জানলাম, এটি একই সঙ্গে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভবনও। অনেকে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন হিসেবেও অভিহিত করে থাকে। কিন্তু না, এটি শুধু সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার। সবচেয়ে উঁচু ভবন হলো দুবাইতে অবস্থিত ‘বুর্জ খলিফা’ ভবনটি। মূলত টেলিভিশন সম্প্রচার আধুনিকায়নের জন্য জাপান সরকার ২০০৬ সালে এর এটি নির্মাণের পরিকল্পনা করে। ২০১২ সাল থেকে পর্যটকদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারের উপরে যখন ওঠলাম; মনে হলো ঝকঝকে নভোযান চড়ে দক্ষিণ আকাশের মাথা ক্রস করে যেন উত্তর আকাশ বরাবর নেমে এলাম। নানা দেশের মানুষের ভীড়, জটলা, গোপন শূন্যতাকে উড়িয়ে দিচ্ছে বহুকণ্ঠ কোরাসের যৌথসুর। এই টাওয়ারে হয়তো জীবনে দ্বিতীয়বার আসা হবে না- লিফটে প্রতিটি ফ্লোর একবার করে ঢুঁ মেরে, ছবি তুলছি আর দেখছি কৌতুহলী চোখ।

ওদের কত প্রশ্ন, কত বার্তা। মনে হলো, অনুভূতিকে আসলে কখনো বেঁধে রাখতে নেই। যখন নীচে অবতরণ করলাম, দেখলাম স্কাই ট্রি একসময় দিগন্ত পেরিয়ে অনেক দূর দেশে হারিয়ে গেল। উল্লসিত অনুভূতিতে এর আগেই ক্যামেরাবন্দি হয়েছিলাম। আমাদের ঢাকার ওয়ারির ছেলে কাজল মজুমদার। ২৭ বছর জাপান মূলুকে আছেন। জাপানি ভাষা বলেন বাংলার চেয়েও স্বাচ্ছন্দ্যে।

তিনি একদিন আমাকে জানালেন, জাপানিদের ঐতিহ্য নগ্ন স্নান সম্পর্কে। ‘পাবলিক বাথ’ সম্পর্কে উৎসাহ বেড়ে গেল। এখানে প্রতিটি ৩ থেকে ৫ তারকা হোটেলে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ‘পাবলিক বাথ’ আছে। হোটেলের বাইরেও প্রতিটি শহরে আছে এ ধরনের পাবলিক বাথ। জীবানুমুক্ত থাকার জন্যে এখানে কেউ কাপড় পরে গোসল করে না। নারী আর পুরুষদের জন্যে পৃথক ব্যবস্থা। তবে অনেক জায়গায় দেখেছি ছেলে মেয়ে একসঙ্গেও গোসল করে।

এমনকি বাপ ছেলে বা পুরো পরিবার একসঙ্গে উলঙ্গ হয়ে গোসল করে থাকেন। প্রথমে লকারে পোশাক রেখে পুরো নগ্ন হয়ে শাওয়ার এরিয়ায় ঢুকতে হয়। ঢুকেই শ্যাম্পু, বডি লোশন দিয়ে গোছল করতে হয়। তারপর বিশাল ঝাকুঝি সুইমিং পুলে কমপক্ষে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট থেকে আরেকটি অংশে ৪০ ডিগ্রির অনেক বেশি তাপমাত্রায় বসে থাকতে হয়।

এরপর সাউনায় একটি কক্ষে ৮০ থেকে ৯০ ডিগ্রি তাপে আরো ১৫ মিনিট। সবশেষে ঠান্ডা পানির সুইমিং পুলে গোসল সেরে আবার শাওয়ার। ১৬ বছরের ছেলে থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই একসঙ্গে উলঙ্গ হয়ে গোসল করছে। কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না। সবাই সাবলিল। তবে এসব কিছুর জন্যে কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না। শুধু লকারে ১০০ ইয়েন ছাড়া।

জাপান ঘুরবো অথচ চেরিফুল দর্শন হবে না, তা কি হয়? আশ্চর্য! ট্রেনে যেতে যেতে চেরিফুল কোথাও চোখে পড়লো না। জাপানের চেরি দেখতে তাই ঢুকতেই হলো সিনজুকুর বাগানে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও যেখানে কি-না প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সাহেবকে ছুটে আসতে হয় বছরে একবার। পৃথিবীর যতো ধুরন্ধর রাষ্ট্রনায়কগণ জাপান সফরে আসেন; তাদের সবাইকে নিমন্ত্রণ করে আনা হয় চেরির বাগানে।

সম্ভবত এর পেছনেও জাপানের কূটনীতি! জাপানের জাতীয় অগ্রগতিতে এই চেরি তাই শৌর্য ও সজীবতার প্রতীক। চেরিফুলকে এখানে তুলনা করা হয় সামুরাইদের সঙ্গে। সামুরাই হচ্ছে একটি বীর্যবান যোদ্ধাশ্রেণি। যারা মহৎ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অজেয় তেজে প্রতিদিনই জাপানিদের মনে দীপ্তিমান। আসলেই কি তাই নয়?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত, প্রতিনিয়ত টাইফুন, ভূ-কম্পনে কেঁপে ওঠা, প্রাকৃতিক সম্পদে দৈন্য এক দেশ জাপান পৃথিবীর নানা দেশ থেকে কাঁচামালের রসদ জোগাড় করে এনে, কী নিপুণভাবেই না শিল্পসামগ্রী তৈরি করে। এতো নিখুঁত এর পণ্যের গুণগত মান যে, ক্রেতা বনে যায় অর্ধেক পৃথিবী!

একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস বিদায়ের মুহুর্তকে আলিঙ্গন করলে, ভাবি টোকিওর লাল সূর্যটা কি হ্নদয় থেকে ডুব দিলো? না! আমি আবার আসবো শিশিরের পালক ছুঁয়ে, চকচকে পালিশ করা জাপানি কালো বুটে হলুদপাতা মাড়িয়ে…

বৌদ্ধদের মোমের আলোয় শেষবারের মতো নিজের প্রার্থনাটুকু সেরে নিতে! প্রতিটি বিদায় মুহুর্ত বুঝি এমনই সঘন। কাজলদার জাপানি বউয়ের থমথমে মুখখানা দেখে আমার চোখ ছলছল করে উঠলো। মনেও কি ধড়ফড়? ঘোরের মধ্যে থাকা একটি সপ্তাহ এত অল্পতেই ফুরিয়ে গিয়েও ফুরোলো না!

অনুভূতির অন্তঃস্থলে থাকবে শত কষ্ঠের মধ্যে থাকা প্রবাসীদের ভালোবাসা। প্রাপ্তির হিসাব কষলে টোকিও আমাকে দিয়েছে অন্তর্জগতের বাইরে এসে বহিঃর্জগতে দাঁড়ানোর একটি চমৎকার প্লট। চিত্তের সেই অভিঘাতে জ্ঞানীদের মতো আমারও লক্ষ্যবস্তু হয়ে গেল, কালি-কলম আর মন।

জেএমএস/জেআইএম