ক্যাম্পাস

রাবির উপাচার্য নিয়োগে আলোচনায় যারা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৬ মে। ওইদিন থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা।

Advertisement

চার বছরের জন্য এখনো নির্দিষ্ট কেউ নিয়োগ পাননি এ পদে। নতুন উপাচার্য কে হচ্ছেন সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা। এমনকি কে হচ্ছেন উপাচার্য সেটি শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারী নির্বিশেষে আলোচনা চলছে মুখে মুখে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপাচার্য পদে আসতে পারেন এমন ডজনখানেক শিক্ষকদের কথা আসছে বারবার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচিত প্যানেল থেকে দুদশক ধরে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় সরকার উপাচার্য নিয়োগ দেয়। সেজন্য নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় কে উপাচার্য হচ্ছেন।

রাবিতে উপাচার্য নিয়োগের আলোচনায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান। ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত উপ-উপাচার্য পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদের ডীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এবং ভূতত্ত্ব ও খনি বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মূলত বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন প্রায় ৩৪ বছর ধরে।

Advertisement

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেমের নামও আছে আলোচনায়। এই অধ্যাপকের পিএইচডি গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতির ওপর বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন তিনি। একাডেমিশিয়ান হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা।

একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজশাহী জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের এই সাধারণ সম্পাদক সরকার মনোনীত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৮ সাল থেকে।

ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রকীব আহমেদ। ২০১৭ সালে উপাচার্য পদে নিয়োগ পাচ্ছেন বলে আলোচনায় ছিলেন তিনি। এমনকি গণমাধ্যমে খবরও হয়েছিল নিয়োগ পেয়েছেন উপাচার্য পদে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবারও আলোচনায় আছেন তিনি। ১৯৮১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া এবারের উপাচার্যের আলোচনায় আছেন প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক তিনি। ১৯৯০ সালের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে জাপানের ওকাইমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মলিকুলার বায়োলজির উপর পিএইচডি করেন।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিভাগের সভাপতি, ২০১৪-১৬ পর্যন্ত বিজ্ঞান অনুষদের ডীন, গত ৬ বছর ধরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাবা এবং চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য হওয়ায় উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি দেখছেন অনেকে।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুন্নবী সামাদী বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক লাইব্রেরি প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দক্ষ সংগঠন হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার।

গুঞ্জন আছে বর্তমান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল্লাহ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. জিনাত আরা, একই বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইয়েদুজ্জামান মিলন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজের সদস্য বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক ড. মজিবুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেনের ব্যাপারেও।

শিক্ষক শিক্ষার্থী নির্বিশেষে সবার চাওয়া শিক্ষা ও গবেষণায় ভূমিকা রেখেছেন এমন কাউকেই নিয়োগ দেয়া হোক উপাচার্য হিসেবে। সালমান শাকিল/এসজে