জাতীয়

ইয়াসের প্রভাবে কাল রাত থেকে বৃষ্টি, প্লাবিত হতে পারে নিম্নাঞ্চল

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার পর থেকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। কাল দিবাগত রাত থেকে ধীরে ধীরে বাতাস শুরু হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় দেশের উপকূলীয় অঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

Advertisement

বুধবার (২৬ মে) থেকে জোয়ারের পানি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ শুরু করতে পারে।

সোমবার (২৪ মে) দুপুরে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব এখনও পড়তে শুরু করেনি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বলতে যেটা বুঝি, সেই প্রভাব মঙ্গলবার (২৫ মে) রাত থেকে পড়তে শুরু করবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। ২৬ মে সকাল থেকে ভারি বর্ষণ শুরু হবে। আর বাতাস রাতে শুরু হবে। ২৬ মে বাতাস আরও বেশি পাওয়া শুরু করবো, তবে অনেক বেশি না।’

Advertisement

আরিফ হোসেন বলেন, ‘জোয়ারের পানি উঠা শুরু করবে বুধবার (২৬ মে) থেকে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে নিম্নাঞ্চলগুলো। জোয়ারটা হতে পারে পূর্ণিমার কারণে। পূর্ণিমার সময় এমনি জোয়ারের পানি বেশি হয়। ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের কারণে সেটা আরও স্ফীত হতে পারে। সাতক্ষীরা, খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী উপকূল জোয়ারের পানিতে বেশি প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

এদিকে আজ সকালে আবহাওয়া অধিদফতর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনিভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি আজ (২৪ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনিভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

Advertisement

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দেয়া হচ্ছে, সেটি যদি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ রূপান্তর হয়, তবে তা এক পর্যায়ে শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুরো উপকূলকে সতর্ক থাকতে হবে।

পিডি/এমএইচআর/এএসএম