জাতীয়

ভূমি সংক্রান্ত ফি দেয়া যাবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর, মিউটেশন ফি, খতিয়ান ফিসহ যাবতীয় ফি পরিশোধ করা যাবে। এজন্য একটি ব্যাংক এবং তিনটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার।

Advertisement

সোমবার (২৪ মে) সচিবালয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল), মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ, বিকাশ ও উপায়-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এ সময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস চুক্তিতে সই করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, মিউটেশন ফি, খতিয়ান ফিসহ যাবতীয় ফি পরিশোধের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় একটি অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিকরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনে সকল ফি প্রদান করতে পারবেন। অনলাইনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সব সেবা স্থাপনের জন্য ভূমিসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়, পেমেন্ট গেটওয়ে চ্যানেল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উপায়, নগদ ও বিকাশ ও ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউসিবিএলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হচ্ছে।

Advertisement

এতে ভূমিসেবা প্ল্যাটফর্ম, পেমেন্ট গেটওয়ে চ্যানেল ও ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় হবে। এই চুক্তির আওতায ইউসিবিএল হবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়কারী তথা সেটেলমেন্ট ব্যাংক। সাধারণ মানুষ উপায়, নগদ, বিকাশ এবং অন্যান্য পেমেন্ট গেটওয়ে চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের জমির বিভিন্ন ফি প্রদান করতে পারবেন।

ফি পরিশোধের পর ভূমিসেবা গ্রহীতারা কিউআর কোড সমৃদ্ধ রশিদ পাবেন এবং সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন। উপায়, বিকাশ এবং নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সেটেলমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হয়ে ই-চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে স্থানান্তরিত হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যখন শুরুতে উদ্যোগ নিয়েছি, এটা চ্যালেঞ্জ ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভেতরে ভেতরে কাজ হয়েছে। পেমেন্ট গেটওয়ে নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ইউসিবি এগিয়ে এসেছে। উপায়, নগদ, বিকাশও এগিয়ে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া। আমাদের ডিজিটাল প্রসেসটা খুবই ইফেকটিভ হয়েছে। আমরা যাই করি চেষ্টা করি। কথা ও কাজের সঙ্গে মিল রাখি।’

Advertisement

ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে একজন মানুষকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। কারণ জানতে হবে মানুষটা কে? রেজিস্ট্রেশন প্ল্যাটফর্মটা আমরা তৈরি করেছি, এনআইডির সঙ্গে ভেরিফাইড। একই সঙ্গে তার একটা মোবাইল নম্বর রেজিস্টার্ড থাকবে। এই মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। এই সপ্তাহের শেষে আমরা বিজ্ঞাপন প্রচার করব যে রেজিস্ট্রেশনের প্ল্যাফর্মটা ওপেন। মানুষ যাতে স্বপ্রণোদিত হয়ে রেজিস্ট্রেশন করে।’

তিনটি উপায়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওয়েবসাইটে ঢুকে সরাসরি করা যাবে, ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে করা যাবে। কল সেন্টারে ফোন করেও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে, এটা নতুন একটা ডাইমেনশন। রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পর বাকি তথ্য আমাদের লোকজন এন্ট্রি দেবে। দেয়ার পর তিনি মোবাইলে এসএমএস পাবেন। এসএমএস পাওয়ার পর উনি যখনই জানতে চাইবেন আমার খাজনা কত, তাকে মোবাইলে দেয়া হবে, একটা টোকেন নম্বর দেয়া হবে। সেই নম্বর দিয়ে যে কোনো এমএফএসে (মোবাইল ব্যাংকিং) ঢুকে নম্বর উল্লেখ করে পেমেন্ট দিলে আমরা সিস্টেম বুঝে ফেলবে এটা অত সালের এই লোকের খাজনা। এই হলো প্রক্রিয়া।’

তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে ই-পর্চা বা ডিজিটাল রেকর্ডরুম চালু করতে যাচ্ছি। অলরেডি চালু করেছি। এক কোটি ৭৬ লাখ রেকর্ড আমাদের আছে। যে কেউ ওয়েবসাইটে গিয়ে এনআইডি দিয়ে খতিয়ান দেখা যাবে। এই সার্ভিসটিও টেলিফোনের মাধ্যমে দেয়ার চিন্তা করছি। এটা খুব তাড়াতাড়ি চালু হবে। একজন মানুষ ঘরে বসে ফোন করে পর্চার আবেদন দিতে পারবে। পেমেন্টটা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ যখন উত্তরণ হলো মানুষকে আর ভূমি অফিসে যেতে হচ্ছে না।’

সেবা প্রদানকারী ও সেবাদাতার দেখা না হলে দুর্নীতি ও ভোগান্তি অনেক কিছু কমে যায় বলেও জানান ভূমি সচিব।

আরএমএম/ইএ/জেআইএম