আন্তর্জাতিক

আল-আকসায় নামাজরত মুসল্লিদের তাড়িয়ে ইহুদিদের ঢোকাল ইসরায়েলি পুলিশ

ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমাবর্ষণ আপাতত বন্ধ হলেও থামেনি ইসরায়েলের দখলদারিত্ব। টানা ১১ দিনের প্রাণঘাতী লড়াই শেষে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে যুদ্ধবিরতি পালন করছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। তবে এই বিরতি কতক্ষণ টিকবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ নানাভাবে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গত রোববার মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসা থেকে নামাজরত মুসল্লিদের পিটিয়ে বের করে সেখানে একদল ইহুদিকে ঢুকিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, রোববার ফজরের নামাজ পড়ার সময় পবিত্র হারাম-আল শরিফে মুসল্লিদের ওপর আচমকা হামলা চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। এসময় তাদের প্রচণ্ড মারধর করে বের করে দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ইসরায়েলের একদল ইহুদি দখলদার সেখানে প্রবেশ করে।

عاجل| بحماية قوات الاحتلال.. مستوطنون يقتحمون #المسجد_الأقصى المبارك. pic.twitter.com/GO7iMcPrxN

— شبكة قدس الإخبارية (@qudsn) May 23, 2021

ওয়াফা জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ছয় ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। এদের মধ্যে ফাদি আলিয়ান নামে আল-আকসার এক নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছেন। তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনা ভিডিও করা চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা গেছে।

Advertisement

এছাড়া আল-আকসার প্রবেশপথে কড়াকড়িও বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে ৪৫ বছরের কম বয়সী মুসল্লিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে দখলদাররা।

شاهد| قوات الاحتلال تخرج شبانًا من #المسجد_الأقصى، قبل قليل. pic.twitter.com/ljOxSTIP9G

— شبكة قدس الإخبارية (@qudsn) May 23, 2021

এর আগে, গত রমজান মাসের শেষের দিকে আল-আকসা প্রাঙ্গণে তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এর সঙ্গে পূর্ব জেরুজালেম থেকে উচ্ছেদের হুমকি ফিলিস্তিনিদের ভেতর ক্ষোভের আগুন জ্বেলে দেয়। বিভিন্ন শহরে শুরু হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। কিন্তু এর কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর উল্টো হামলা-সহিংসতা বাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল।

এই দখলদারিত্ব বন্ধে ইসরায়েলকে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তবে সেই সময়সীমার মধ্যে ইসরায়েলিরা নিবৃত্ত না হলে প্রতিবাদে ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনি এই যোদ্ধা গোষ্ঠী। জবাবে গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। টানা ১১ দিন চলে এই সংঘাত। এতে অন্তত ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের মধ্যে ৬৬ শিশুও রয়েছে। আর ফিলিস্তিনি হামলায় ইসরায়েলে প্রাণ হারান বিদেশিসহ ১২ জন।

Advertisement

অবশেষে মিসরের মধ্যস্থতায় গত বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। তবে ইসরায়েলিদের উস্কানিতে এই বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার আল-আকসায় ফিলিস্তিনিরা বিজয়োল্লাস করার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি পুলিশ।

এছাড়া, সম্প্রতি উগ্রবাদী ইহুদি দখলদাররা বেশি সংখ্যায় আল-আকসায় যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। পবিত্র মসজিদটির জায়গায় তৃতীয় ইহুদি উপাসনালয় বানানোর লক্ষ্য তাদের। যদিও ১৯৬৭ সালে চুক্তিতে বলা হয়েছে, কেবল মুসলিমরাই পবিত্র হারাম আল-শরিফে প্রার্থনা করতে পারবেন।

সূত্র: আল-জাজিরা

কেএএ/এএসএম