দেশজুড়ে

যশোরে পৌর নির্বাচনে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস

যশোরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ তরুণ ও নতুন মুখের ৬ প্রার্থীকে মনোনীত করলেও বিএনপি ভরসা রেখেছে তাদের নির্বাচিত ৬ মেয়রের প্রতিই। ফলে লড়াইটা জমজমাট হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।জানা গেছে, ২০১১ সালের নির্বাচনে এই ৬ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। সেই ইমেজ পুনরুদ্ধারে কৌশল হিসেবে নৌকার টিকেট তুলে দেয়া হয়েছে তরুণ ও নতুন মুখের ৬ প্রার্থীর হাতে। আর বিএনপির বর্তমান মেয়রদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ক্লিন ইমেজের প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে সুবিধা পাবেন বলেও প্রত্যাশা আওয়ামী ঘরানার সমর্থক ও ভোটারদের।তবে বিএনপি সমর্থকদের দাবি, সফল ৬ পৌর মেয়র নির্বাচনে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবেন। দু’দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর সমর্থকদের এসব আলোচনা সমালোচনায় নির্বাচনের পালে নতুন হাওয়া লেগেছে।আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু যশোর পৌরসভায়, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল চৌগাছায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহামুদুল হাসান মনিরামপুরে, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোড়ল কেশবপুরে, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নেতা কামরুজ্জামান বাচ্চু বাঘারপাড়ায় এবং অভয়নগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুশান্ত দাস শান্ত নওয়াপাড়া পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।   বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির বর্তমান ৬ মেয়র যশোরে মারুফুল ইসলাম, চৌগাছায় সেলিম রেজা আওলিয়া, মনিরামপুরে শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, কেশবপুরে আবদুস সামাদ বিশ্বাস, বাঘারপাড়ায় আবদুল হাই মনা ও নওয়াপাড়ায় রবিউল হোসেনের ওপরই ভরসা রাখছে দলটি। যশোরের ৬ পৌরসভা নির্বাচনে কারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী এ নিয়ে গত দু’সপ্তাহ ধরেই পৌরবাসীর মধ্যে নানা গুঞ্জন ছিল। তবে এক্ষেত্রে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের টানাপোড়েন বেশি ছিল। বিএনপি সমর্থকদের ধারণাই ছিল, মেয়রদের উপরই দলটি আস্থা রাখবে। বিপরীতে একেক সময় একের প্রার্থী চূড়ান্তের গুঞ্জন শুনছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। সর্বশেষ ৩০ নভেম্বর কেন্দ্রে জেলা আওয়ামী লীগের পৃথক দুটি তালিকা পাঠানোর পর জল্পনা কল্পনা আরও বাড়তে থাকে। অবশেষে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্লেষণ করে মঙ্গলবার মধ্যরাতে মনোনিতদের হাতে নৌকার টিকিট তুলে দিয়েছেন।  আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বলছেন, বিএনপির বর্তমান ৬ মেয়রের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ফলে তাদের চেয়ে ক্লিন ইমেজের তরুণ ও নতুন মুখের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে একধাপ এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী মাঠে ক্লিন ইমেজ কাজে লাগিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে পারবে।জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু বলেন, যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে আমরা যশোর পৌরবাসী দীর্ঘদিন কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার যশোরে যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রার্থীদের জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা মেয়র প্রার্থীদের মনোনিত করেছেন। যাচাই বাছাই করে যোগ্যদেরই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।অপরদিকে, বিএনপি সমর্থকরা মনে করছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে তাদের ৬ মেয়র পুনরায় নির্বাচিত হবেন। কারণ এই মেয়ররা নির্বাচনী এলাকায় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন। যশোর জেলা বিএপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু জানিয়েছেন, জেলা বিএনপির তালিকা বিবেচনা করে কেন্দ্র থেকে বিএনপির বর্তমান ৬ জন মেয়রকে পুনরায় দলীয় মনোয়ন দেয়া হয়েছে। এই প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে লড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জয় নিশ্চিত করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।যশোর পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী মারুফুল ইসলাম জানিয়েছেন, মামলায় জর্জরিত বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনে ঠিক মতো মাঠে নামতে পারবেন কিনা, পুলিশ তাদের নামতে দেবে কিনা সেটিও চিন্তার বিষয়। আর নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে হওয়া নিয়েও তাদের সংশয় রয়েছে। তবে এসব মোকাবেলা করেই তারা জয় ছিনিয়ে আনতে চান বলে জানান।      মিলন রহমান/এসএস/এমএস

Advertisement