পোশাক মানুষের ইজ্জতের হেফাজত ও শালিনতার বস্তু। সুন্দর ও উত্তম পোশাক পরার নির্দেশনা এসেছে কুরআন-সুন্নায়। অথচ পোশাকের কারণে নারীরা জাহান্নামী হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কী ধরনের পোশাক পরার কারণে নারীরা জাহান্নামী হবে? সে সম্পর্কে হাদিসের বর্ণনা ও ভবিষ্যদ্বাণী এমন-
Advertisement
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুই প্রকার জাহান্নামী মানুষ আসবে; যাদেরকে আমি আমার যুগে দেখতে পাচ্ছি না। এক প্রকার হচ্ছে, ওই সব নারী!-> যারা কাপড় পরেও উলংগ থাকবে।> তারা সাজ-সজ্জা করে পর পুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও অন্য পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট থাকবে।> তাদের মাথার খোপা (সাজ সজ্জা ও ফ্যাশনের কারণে) উটের কুঁজের মত (উঁচু, যা) এদিক-ওদিক হেলানো থাকবে।তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না; এমনকি তারা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ, জান্নাতের সুঘ্রাণ ৫শ’ বছর রাস্তার দূরত্ব থেকেও অনুভব করা যাবে।’ (মুসলিম)
হাদিসে উল্লেখিত পোশাক ‘‘কাপড় পরেও উলংগ থাকা’র মর্মার্থ হচ্ছে-- যেসব নারী এমন পাতলা কাপড় পরে; যার ফলে কাপড়ের ওপর থেকেই ভেতরে শরীরের চামড়া ও পশম দেখা যায়।- আবার এমন টাইট বা আঁট-শাট শোশাক পরে যে, তাতে তাদের শরীরের আকার-আকৃতি সুস্পষ্ট হয়ে পড়ে।- তারাও এ কথার সঙ্গে জড়িত, যারা পরিপূর্ণ পর্দা করে না বরং পর্দার নামে ফ্যাশন করে। বিভিন্ন ডিজাইনের টাইট-ফিটিং বোরকা পড়ে। যার ফলে তাদের শরীরের গঠন ও আকৃতি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে।
জাহান্নামের শাস্তি বর্ণনাআল্লাহ তাআলা জাহান্নামীদের শাস্তির বর্ণনা সুস্পষ্টভাবে কুরআনুল কারিমে তুলে ধরেছেন এভাবে-‘নিশ্চয়ই সীমালংঘনকারী অবাধ্য লোকদের জন্যে জাহান্নাম শত্রুর মতো ওত পেতে বসে থাকবে। তারা সেখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী অবস্থান করবে। কিন্তু সেখানে তারা তৃপ্তিদায়ক কোনো শীতল খাবার বা পানীয় আস্বাদন করবে না। তাদেরকে শুধুমাত্র ফুটন্ত গরম পানি ও দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা পূজ খাওয়ানো হবে। এটাই হচ্ছে তাদের উপযুক্ত প্রতিদান, কারণ তারা হিসাব-নিকাশের কোনো পরোয়া করতো না। আর আমার আয়াত (বা নিদর্শন) সমূহকে মিথ্যা বলতো।’ (সুরা নাবা : আয়াত ২১-২৮)
Advertisement
নারী প্রতি আহ্বানহে প্রিয় মুসলিম নারী! তারপরও কি সাবধান হওয়ার সময় আসেনি? দুনিয়াতে নারীর মর্যাদা যেমন বেশি তেমনি শ্রেষ্ঠ সম্পদও বটে। নারীকে স্মরণ রাখা জরুরি যে, নারী কারো মা; কারো স্ত্রী; কারো বোন; আবার কারো মেয়ে? ইসলামই নারীকে দিয়েছে অসামান্য মর্যাদা।তাই নিজেদের ইজ্জত ও সম্মান বজায় রাখা। নিজেকে অন্যের ভোগের বস্তুতে পরিণত না করা। কারো পন্য হিসেবে ব্যবহার না হওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখাই নারী প্রধান কাজ ও দায়িত্ব।
বিশেষ করেপোশাক পরার ক্ষেত্রে দেখেশুনে শালীন পোশাক পরা। পাতলা ও খাটো পোশাক পরিহার করা। টাইট-ফিটিং তথা আঁট-শাট পোশাক থেকে বিরত থাকা। অন্যের সামনে নিজের রূপ ও সৌন্দর্য দেখানো থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভবিষ্যদ্বাণীতে যে বিষয়গুলো ওঠে এসেছে, তা থেকে নিজেদের বিরত রাখার পাশাপাশি ঢিলে-ঢালা পোশাক পরা এবং বাইরে বের হলেও ঢিলে-ঢালা বোরকা পরিধান করা আবশ্যক। যাতে প্রকাশ পাবে না শারীরিক গঠন ও সৌন্দর্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে নিজেদের হেফাজত রাখার তাওফিক দান করুন। নিজেদের জন্য কল্যাণকর সব বিষয়ে জ্ঞান ও চিন্তা করার তাওফিক দান করুন। যেভাবে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন-يُؤتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاء وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيراً وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الأَلْبَابِতিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। আর উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৬৯)
Advertisement
এমএমএস/এএসএম