শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। তবে দিনে কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করতে হয়, তা জানেন কি? প্রতিদিন আপনি যে পরিমাণে ক্যালোরি গ্রহণ করেন; তার মধ্যে ১০ শতাংশ প্রোটিন রাখতে হবে।এটি পরিমাপের জন্য আপনার ওজন কত পাউন্ড তার সঙ্গে ০.৩৬ গুণ করলেই বেরিয়ে যাবে।
Advertisement
শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। শরীরে প্রকাশ পায় প্রোটিনের অভাবে নানা উপসর্গ। এসব উপসর্গ অনেকেই অবহেলা করে থাকেন! এর ফলাফল হতে পারে মারাত্মক। জেনে নিন প্রোটিনের অভাবে শরীরে মারাত্মক যেসব উপসর্গ দেখা দেয়-
>> আপনার শরীর যখন পর্যাপ্ত প্রোটিন পাবে না; তখন শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন পেট, পায়ের পাতা বা হাত ফুলে যেতে পারে। একে এডিমাও বলা হয়।
>> মস্তিষ্ক নিউরোট্রান্সমিটার নামক রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকে বিভিন্ন তথ্য রিলে করার জন্য। এই নিউরোট্রান্সমিটার অনেকগুলো এমিনো অ্যাসিড দ্বারা তৈরি, যা প্রোটিনের তৈরি। সুতরাং শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে সেই নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর বাড়তে পারে না। এর ফলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না। ডোপামিন এবং সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণ কমে যায়। এ কারণে শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে রোগী হতাশ বা অতিরিক্ত রাগান্বিত থাকেন।
Advertisement
>> চুল, নখ ও ত্বক তৈরি হয় ইলাস্টিন, কোলাজেন এবং কেরাটিন নামক প্রোটিনের সাহায্যে। তাই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিলে নখ পাতলা হয়ে যায়। চুল পড়ে যায় এবং ত্বকও ফ্যাকাশে হতে থাকে।
>> গবেষণা দেখা গেছে, পর্যাপ্ত প্রোটিন না খাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ক্লান্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়বেন। প্রোটিনের অভাবে পেশি শক্তি কমতে থাকে এবং বিপাক ধীর হয়ে যায়। এমনকি প্রোটিনের অভাব রক্ত স্বল্পতার কারণও হতে পারে। প্রোটিনের অভাবে শরীরের কোষগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না, যা আপনাকে ক্লান্ত করে তোলে।
>> প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে মুহূর্তেই মানুষ চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে আপনি সারাদিন অ্যানার্জি পাবেন। প্রোটিন শরীরকে জ্বালানী দেয়। কার্বহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন হলো ক্যালোরির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
>> শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষত হলে; তা দ্রুত সারে না। প্রোটিনের অভাবে শরীরে পর্যাপ্ত কোলাজেন তৈরি না হওয়ায় ঘা শুকায় না সহজে। রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রোটিনের দরকার হয়।
Advertisement
>> রক্তে অ্যামিনো অ্যাসিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যার ফলে শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাদা রক্তকণিকা সক্রিয় থাকে। তবে প্রোটিনের অভাবে অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদন কমে যায়।
>> প্রোটিনের অভাবে মারাত্মক অপুষ্টিজনিত রোগকে কোওয়াশিওরকর বলা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার দেশগুলোতে শিশুদের মধ্যে প্রোটিনের অভাব দেখা দেয়।
>> আপনি যদি নিয়মিত অনুশীলন করেন এবং সুষম ডায়েট খান; তাহলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। তবে অ্যাথলিটদের আরও বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। অতিরিক্ত প্রোটিনও সমস্যার কারণ হতে পারে।
সূত্র: ওয়েবএমডি
জেএমএস/জিকেএস