বরকতময় মাস রমজান বিদায় নিয়েছে। রোজা পালনকারী বান্দাদের জন্য আবারও এক বছর পর ফিরে আসবে নাজাতের এ মাস। কিন্তু আগামী ১১ মাসে রোজা পালনকারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী? রমজান বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজাদারের আমলও কি বন্ধ হয়ে যাবে? আল্লাহ তাআলা তার একনিষ্ঠ বান্দাদের ইবাদত-বন্দেগি ও আমল সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশনাই বা কী?
Advertisement
মুমিন মুসলমানের জন্য সব দিন-রাতই ইবাদত-বন্দেগির। তবে রমজান ও বিশেষ দিনগুলোতে ঈমানদার বান্দা ইবাদতে বেশি মনোযোগী হয়; তাই রমজান বিদায় নিলেও প্রকৃত ঈমানদার বান্দার আমল ও ইবাদতে ঘাটতি হয় না। এ কথাই মহান আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়ে এভাবে বলেছেন-
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
‘আর আপনি আপনার পালনকর্তার ইবাদত করুন, যে পর্যন্ত আপনার কাছে নিশ্চিত কথা না আসে।’ ([সুরা হিজর : আয়াত ৯৯)
Advertisement
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার প্রতি ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হতে এভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত আপনি আপনার প্রভুর ইবাদত করতে থাকুন।’
সুতরাং আবার রমজান মাস ফিরে আসা পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর কর্তব্য হলো- রমজান মাসে যেসব নেক আমলে অভ্যাস্ত হয়েছেন; সেসব নেক আমল বন্ধ না করে একটানা বিরতিহীনভাবে চালিয়ে যাওয়া। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সেই আমল অধিক পছন্দনীয়; যা লাগাতার করে যাওয়া হয়; যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সবর ও সহমর্মিতার মাস অতিবাহিত হয়েগেছে। সবর ও সহমর্মিতা আল্লাহভিরু বান্দার অন্যতম সম্পদ। এ মাসে যারা সবর ও সহমর্মিতায় নিজেকে তৈরি করে নিয়েছে বছরের বাকি মাসগুলোতেও এ সবর ও সহমর্মিতার আমল জারি থাকে। যেন মনে হয় এখনও রমজানের বরকতময় মাসই অতিবাহিত হচ্ছে।
Advertisement
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, রমজান চলে যাওয়ার পরও সপ্তাহিক ও মাসিক রোজায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা। নিয়মিত জামাআতে নামাজ পড়ার পাশাপাশি রাতের নামাজে মনোযোগী থাকা। সুন্নাত ও নফল নামাজে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি কুরআন তেলাওয়াত, নফল ইবাদত, ও দান-সাদকায় রমজানের মতোই সচেষ্ট থাকা।
এ বিষয়টি সব সময় মনে রাখা জরুরি যে, রমজান মাসের ফরজ রোজা পালনের বিধান এ মাসগুলোতে না থাকলেও রয়েছে নফল রোজা, নামাজ, সাদকার সুযোগ। যদি পরিশুদ্ধ নিয়ত ও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে তবে নেয়ামতে ভরপুর থাকবে মুমিন বান্দার প্রতিটি দিন ও রাত।
তাই প্র্যত্যেক রাতে যেমন তাহাজ্জুদের জন্য কিছু সময় নির্দিষ্ট রাখা জরুরি তেমনি প্রত্যেক মাসে কয়েকদিন রোজা রাখার জন্য হাদিসে বর্ণিত নির্ধারিত দিনগুলো ঠিক রাখাও আবশ্যক। আর তাতেই মুমিন মুসলমানের বাকি ১১টি মাসও হবে আমল-ইবাদতে প্রাণবন্ত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বছরজুড়ে ইবাদত-বন্দেগি ও আমলে নিয়োজিত থাকার তাওফিক দান করুন। বাকি ১১ মাসও রমজানের আমেজ ও পরিবেশ বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। এমনকি মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত রমজানের মতোই নিজেকে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস