বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় দেড় হাজার চাকরিপ্রার্থীকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশের জন্য বেঁধে দেয়া ৭ কার্যদিবসের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সুপারিশের অগ্রগতি হলফনামা আকারে জমা দেবেন তাদের আইনজীবী।
Advertisement
এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজ দিন নির্ধারিত ছিল। নির্ধারিত দিনে আদালতের কার্যতালিকায় মামলার সংখ্যা বেশি থাকায় শুনানি পিছিয়ে আগামী রোববার (২৩ মে) নতুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
এ সংক্রান্ত বিষয় শুনানিতে উঠলে বৃহস্পতিবার (২০ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে আজ আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ও ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ। এনটিআরসিএ’র পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দীন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভূইয়া ও ফারুক হোসেন।
এর আগে গত ৬ মে হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ এনটিআরসিএ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় দেড় হাজার চাকরিপ্রত্যাশীকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য ৭ দিন সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগ দিয়ে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতও করেও আদেশ দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী প্রায় দেড় হাজার জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে গত ৩০ মার্চ প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি এ সময়ের জন্য স্থগিত করেছিলেন আদালত। আজ সেটা শুনানির জন্যে ধার্য ছিল। শুনানির নির্ধারিত দিনে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ অগ্রহতি দাখিল করবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আগামী ২০ মে নতুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। আশা করি ওইদিন শুনানি হবে।
এর আগে ৭ মার্চ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে ১ থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
Advertisement
একই সঙ্গে নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করতে বলেন আদালত। আদালতের ওই আদেশ বাস্তবায়ন না করায় পুনরায় এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ কর্তৃক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএ কোনো বিজ্ঞপ্তি দিতে পারবে না বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন মো. হানিফ বলেন, ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছেন। ওই রায়ে কয়েক দফা নির্দেশনা ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল সম্মিলিত মেধা তালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারীদের জন্য সুপারিশ করবে এনটিআরসিএ।
কিন্তু অনেক সময় পার হলেও রায় বাস্তবায়ন না করায় রিট আবেদনকারীরা আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারীদের মধ্যে রিটকারী প্রায় দেড় হাজার জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গত ৩০ মার্চ প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি সাত দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আজ (১৮ মে) দিন ধার্য করেন। ওইদিন শুনানি শেষে সেটি আরো শুনানি ও অগ্রগতি প্রতিবেদন জমার দেওয়ার জন্যে ২০ মে দিন ঠিক করেন।
এফএইচ/এমএইচআর/এএসএম