করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারের দেয়া নতুন বই বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বেরীকান্দি বড়খলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী নূর খানের বিরুদ্ধে। ৫ টাকা দরে ৬০০ কেজি বই বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে।
Advertisement
এ ঘটনায় বুধবার (১৯ মে) বিকেলে ওই প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ৮টার দিকে ৫ টাকা কেজিতে ৬০০ কেজি বই ও কার্টন ফাতেমানগর গ্রামের ভ্যানচালক শহীদ মিয়ার কাছে বিক্রি করেন শিক্ষক আলী নূর খান। সেই বই নিজের বাসায় নিয়ে যাওয়ার পথে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ভ্যানটির চাকা গর্তে পড়ে যায়।
পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানে বসে থাকা কয়েকজন যুবক তাকে সাহায্য করতে আসলে তারা ভ্যানভর্তি নতুন বই দেখতে পান এবং ভ্যানসহ চালককে আটক করে রাখেন। পরে ধর্মপাশা থানা পুলিশ এসে বইগুলো উদ্ধার করে ভ্যানচালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
Advertisement
১৯ মে দুপুরে ভ্যানচালক শহীদ মিয়া প্রধান শিক্ষক আলী নূর খানের কাছ থেকে ৫ টাকা কেজি ধরে বইগুলো কিনেছে বলে স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আলী নূর খান বলেন, ‘ভ্যানচালক মিথ্যা কথা বলছে। আমি কোনো বই বিক্রি করিনি।’ সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দেন তিনি।
ভ্যানচালক শহীদ মিয়া বলেন, ‘শিক্ষক আলী নূর খান আমাকে বলেছিলেন তার বিদ্যালয়ে পুরাতন বই বিক্রি করবেন। পরে আমি তার কাছ থেকে ৫ টাকা কেজিতে বই কিনেছি। কিন্তু এখন তিনি তা অস্বীকার করছেন।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
Advertisement
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি বইসহ একজনকে আটক করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী এমন খবরে পুলিশ পাঠাই। পরে ভ্যানচালকসহ সরকারি বই জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়। ভ্যানচালক জানায় প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ৫ টাকা কেজিতে বই কিনেছে। এজন্য তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মর্কতা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ‘এটা সত্যি দুঃখজনক সরকারি বই বিক্রি করা। এ ঘটনায় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মর্কতা রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
লিপসন আহমেদ/এসজে/এএসএম