জাতীয় পরিচযপত্রের কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেয়ার প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’। উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
Advertisement
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে দেয়ার প্রস্তাবনা এসেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এ সংক্রান্ত চিঠি মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বুধবার ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম ইসির পরিবর্তে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করা সংক্রান্ত’ প্রস্তাবে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানিয়ে ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। তবে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, ‘গভীরভাবে পর্যালোচনা করে’ ইসির অবস্থান জানানো হবে।
এর আগে বুধবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভা হয়।
Advertisement
পরে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশনের বুধবারের সভায় এ সংক্রান্ত এজেন্ডা ছিল না। গতকালকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠিটি আমরা পেয়েছি। এ বিষয় নিয়ে এখনও বিস্তারিত পর্যালোচনা করিনি আমরা। পর্যালোচনা করার পরে যদি কিছু বলার থাকে, জানাব।’
বুধবার দেয়া স্মারকলিপির বিষয়েও কমিশন পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে দেশের ১১ কোটি ১৭ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছে। ২০১০ সালে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সুরক্ষা সেবা বিভাগ ওই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত বিধায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন সংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং ডিফারেন্ট মিনস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন্স’- এ সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বসমূহের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
Advertisement
>> জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ এ ‘নির্বাচন কমিশন’ এর পরিবর্তে সরকার শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
>> সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এ অবস্থায় ইসির অধীনে এনআইডি সংক্রান্ত কার্যক্রম ও সেবা নিয়ে আইনগত, অপারেশনাল ও কারিগরি দিক এবং সুবিধা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরিত হলে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুজ্জামান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান তালুকদার স্বাক্ষরিত ইসির কাছে দেয়া স্মারকলিপিতে জানান, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম যেভাবে চলমান রয়েছে তা অব্যাহত রেখে দ্রুত কিভাবে সেবা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, কমিশন বসে বিষয়টি দেখেছেন এবং গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন। কমিশন সভায় এটি নিয়ে ডিটেইলস কোনো আলোচনা হয়নি।’
এইচএস/এমএইচআর/এএসএম