একজন মানুষের হাতের স্পর্শেই জ্বলে ওঠে বাতি। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য তার শরীরের স্পর্শেই চালু হয়ে যায়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, যেখানে মানুষ বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেন; সেখানে এই ব্যক্তির শরীর সহ্য করে নেয় ১১ হাজার ভোল্টেজও।
Advertisement
বলছি, উত্তর ভারতের হরিয়ানের সোনীপটের বাসিন্দা দীপক জাংরার কথা। বর্তমানে তার বয়স ২২ বছর। খালি হাতে এমনকি জিহ্বা দিয়েও দীপক বাতি জ্বালাতে পারেন। তার এই প্রতিভা বিশ্বে বিরল। দীপক তার এই প্রতিভার বিষয়ে টের পান ১৬ বছর বয়সে। একদিন সে তার বাড়িতে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামত করাযর সময় শরীরের বিদ্যুৎ-প্রতিরোধ ক্ষমতা টের পান।
বাড়ির একটি ভাঙা হিটার মেরামত করতে গিয়ে দীপক ভুল করে একটি লাইভ তারকে স্পর্শ করেছিলেন। তবে তিনি অবাক হয়ে যান! কীভাবে এমনটি সম্ভব। তার তো শরীরে কোনো শক লাগেনি! এরপর দীপক তারটি ভালোভাবে পরীক্ষা করেন, দেখেন সত্যিই তারটি সচল এবং বিদ্যুত প্রবাহ হচ্ছে। পরবর্তীতে দীপক বিষয়টি পরীক্ষা করতে, বারবার সচল তার স্পর্শ করেন। দেখেন তার শরীরে বিদ্যুৎ কোনো প্রভাব ফেলছে না।
এরপর দীপক তার পরিবারকে সঙ্গে বিষয়টি জানান। তারাও অবাক হয়ে দীপকের এই অদ্ভূত শক্তি দেখেন। এ বিষয়ে দীপক বলেন, সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। তার কাছ থেকে অনেক মূল্যবান আশির্বাদ পেয়েছি আমি, যা অন্য কারও হাতে নেই।’ দীপকের জিহ্বা ১১ হাজার ভোল্টও সহ্য করতে পারে।
Advertisement
দীপক তার এই অসামান্য প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে এখন দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান হয়ে উঠেছেন। দীপক জানান, আমি কোনো প্লাস বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ছাড়াই খালি হাতে কাজ করি। তবে আমি এসব কাজ সবাইকে বিনামূল্যে করে দেই।’ দীপক নিজ এলাকার ৫ শতাধিক বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন মেরামত করেছেন।
দীপক সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে। দীপকের শরীর বিদ্যুৎরোধী হওয়ার কারণ জানতে এরইমধ্যে পুরো শরীর পরীক্ষা করেছেন তিনি। চিকিৎসকরা তার শরীরে কোনো ধরনের ত্রুটি খুঁজে পাননি।
দীপকের মা জানান, আমার আরও দুইটি ছেলে আছে তবে তাদের মধ্যে এমন গুণ নেই। অথচ দীপকের শরীরের কি-না বিদ্যুৎরোধী। বিশ্বে হয়তো দীপকই একজন, যার এমন গুণাবলী আছে। আমার মনে হয় এটি তার বাবার আশির্বাদ। ২০১১ সালে দীপকের বাবা মারা যান। আর ২০১২ সালে দীপক তার এই বিস্ময়কর প্রতিভার কথা জানতে পারে।
দিল্লির বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী গৌরব সিংহের মতে, ১১ হাজার ভোল্টের শক্তি মারাত্মক হয়ে থাকে। যদি কোনো ব্যক্তি ৫ মিটার দূরেও দাঁড়িয়ে থাকেন; তবে সে উচ্চ তাপের মাধ্যমে পুড়ে যেতে পারেন। যদি কোনো ব্যক্তি ১১ হাজার ভোল্ট ভুলেও স্পর্শ করে, তবে সে শক খায় না বরং তাৎক্ষণিক মারা যায়। ১০০০ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ দিয়ে এক কিলোমিটার লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়। তাহলে ভাবুন একবার!
Advertisement
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, দীপকের শরীর বিদ্যুৎরোধী হলেও, তার উচিত নয় কোনো ধরনের সুরক্ষা ছাড়া এতো বড় ঝুঁকি নেওয়া। কারণ যেকোনো সময় হয়তো বিপদ হতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল/মিরর/ব্রিফলি
জেএমএস/জেআইএম