কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধ বিহারে ঈদ আর বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় থাকে। ঈদে প্রায় এক লাখ পর্যটক ঘুরতে আসে শালবন বিহারে। গত বছরের মতো এবারের চিত্রও ভিন্ন।
Advertisement
লকডাউনের কারণে শালবন বিহারসহ কুমিল্লার পর্যটন ক্ষেত্রগুলো বন্ধ থাকাতে এ এলাকায় বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। কুমিল্লায় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। বৌদ্ধ বিহার ছাড়াও পাশের রূপবানমুড়া, কোটিলা মুড়া, নগরীর চিড়িয়াখানা ও বাণিজ্যিক পার্কগুলোরও এবার একই অবস্থা।
কুমিল্লা নগরী থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে শালবন বিহার। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রেল ও সড়কপথে যাতায়াতের সুব্যবস্থা থাকায় দর্শনার্থীরা এখানে সহজে আসতে পারেন। এখানে অষ্টম শতকের পুরাকীর্তি রয়েছে। রয়েছে ময়নামতি জাদুঘর।
জাদুঘরের পাশে রয়েছে বন বিভাগের পিকনিক স্পট। শালবন বিহারের পাশে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)। কাছাকাছি আছে লালমাই বিরল উদ্ভিদ উদ্যান। কুমিল্লার বেশিরভাগ পার্কের অবস্থানও এই শালবন বিহারের আশেপাশে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৮ মে) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকায় দর্শনার্থীর আনাগোনা নেই। গেটে তালা। ভেতরে থরে থরে ফুটে আছে ফুলতাগাছে বাসা বেঁধেছে বাবুই পাখি। সেখানে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা।
পাতায় পাতায় প্রজাপতি উড়ছে। পাতাবাহারগুলোতে গজেছে নতুন পাতা। ভ্রমরের গুঞ্জন আছে। তবে তা শোনার কেউ নেই। তবে কিছু দর্শনার্থী এসে শালবন বিহার বন্ধ পেয়ে পাশের শাল বাগানে ঘুরাফেরা করছেন।
এই পর্যটন এলাকাকে কেন্দ্র গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই বন্ধ রয়েছে। সাইফুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে ১০হাজার টাকা বিক্রি করতে পারতাম। আজ এক হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। মানুষ না থাকলে কার কাছে বিক্রি করবো?’
বুড়িচং থেকে আসা দর্শনার্থী গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘করোনায় সব বন্ধ। ঈদ উপলক্ষে শিশুরা কোথায়ও ঘুরতে যেতে চায়। বাধ্য হয়ে এদিকে এসেছি। এসে দেখি সব কিছু বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া উচিত।’
Advertisement
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে এখানে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় থাকত। করোনার কারণে গতবারের মতো এবারও শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।’
এসজে/জেআইএম