ভ্রমণ

ঢাকার কাছেই ঘুরে আসুন ‘মিনি পতেঙ্গায়’

একটানা লকডাউনের কারণে এবারের ঈদও ঘরে বসেই কাটিয়েছেন সবাই! লকডাউনের কারণে যেহেতু দেশের দুরপাল্লার পরিবহনগুলো আপাতত বন্ধ আছে; তাই ঢাকার মধ্যেই আশেপাশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। তবে এই করোনাকালে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তবেই ঘুরতে যাওয়া উচিত।

Advertisement

ঢাকার কাছে তেমনই একটি মনোমুগ্ধকর স্থান হলো বাহ্রা ঘাট। দোহার উপজেলায় অবস্থিত এই ঘাট ‘মিনি পতেঙ্গা’ নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় রাজধানীবাসী ডে লং ট্রিপের জন্য বেছে নেন দৃষ্টিনন্দন এই স্থানটি।

পদ্মা নদীর ধারে অবস্থিত এই বাহ্রা ঘাট। সেখান থেকে মৈনট ঘাট একেবারেই নিকটে। মৈনট ঘাট সম্পর্কে সবাই কমবেশি জানেন। অনেকেই হয়তো সেখান থেকে ঘুরেও এসেছেন! তবে যারা এখনো যাননি; তারা সুযোগ পেলেই একদিনের ট্রিপে ঢুঁ মেরে আসুন মৈনট ঘাটসহ ‘মিনি পতেঙ্গ’খ্যাত বাহ্রা ঘাটে।

ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রায় ৩৮ কি.মি. দূরে এটি অবস্থিত। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন আপনার ছুটির দিনে। জানেন তো, মৈনট ঘাটকে ‘মিনি কক্সবাজার’ আর বাহ্রা ঘাট পরিচিত ‘মিনি পতেঙ্গা’ নামে! করোনাকালে অনেকেই এবারের ঈদের ছুটিতে ভিড় করেছেন এসব স্থানে।

Advertisement

বিগত কয়েক বছর ধরে বাহ্রাঘাট সেজেছে নতুন আঙ্গিকে। আগে সবাই মৈনট ঘাটে ভিড় করলেও এখন বাহ্রা ঘাটও মিনি পতেঙ্গা হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নদীভাঙন ঠেকাতে পদ্মা নদীর পাড়ের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে ব্লক।

এই ব্লকের উপর দিয়েই ঘুরে বেড়ান দর্শনার্থীরা। সেখানে জমজমাট আয়োজন- নিয়মিত বসছে হরেক রকম খাবার এবং বাচ্চাদের খেলনার দোকান। পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্যে দর্শনার্থীরা উপভোগ করে চট্টগ্রামের সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গার আবহ।

মিনি পতেঙ্গা ও পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দিনের দ্বিতীয়ভাগ ভালো। তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সী মানুষ নিজেদের মতো করে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায়।

সেখানে দেখা যায়, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। পদ্মার এপাড়ে দোহার আর ওপাড়ে ফরিদপুর। পদ্মায় হঠাৎ করে ঢেউ বেড়ে গিয়ে পাড়ে আছড়ে পড়ে। তাতে পা ভিজিয়ে নেয় দর্শনার্থীরা। সবাই সেলিফ ও নানা ঢঙে ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

Advertisement

মৈনট ঘাটের মতোই মিনি পতেঙ্গার পাড় থেকে পদ্মা নদীতে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায় পাড় ধরে। অনেক সময় প্রচুর রংবেরংয়ের পালের নৌকাও দেখা যায়! পদ্মায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে স্পিড বোট। ৮ জনের চড়ার উপযোগী একটি বোটের ভাড়া আধা ঘণ্টার জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।

ছোট-বড় নানা আকারের ইঞ্জিন নৌকা। ২৫০-৮০০ টাকা ঘণ্টায় এসব ইঞ্জিন নৌকায় ৪ -২৫ জন একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানো যায়। পদ্মাপাড়ে পাওয়া যায় তাজা ইলিশের স্বাদ। কিছুটা বেশি দামে হলেও জেলে নৌকা থেকে কেনা যায় টাটকা ইলিশ।

সারাবছরই দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকলেও যেকোনো ছুটির দিনে দোহারের মৈনট ঘাট ও বাহ্রা ঘাটে ভিড় বাড়ে। বিশেষ করে ঈদের ছুটির সময় মৈনট ও বাহ্রাঘাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই থাকে উপচে পড়া ভিড়।

তবে সূর্যাস্ত পর্যন্তই সেখানে থাকা উত্তম। সন্ধ্যা নামার পর যত দ্রুত সম্ভব স্থান ত্যাগ করতে হয়। কারণ সেখানে তেমন নিরাপত্তা বলয় না থাকায় সন্ধ্যার পরে বখাটে ও মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

যেভাবে যাবেন মিনি পতেঙ্গায়

ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে সেখানে যেতে সময় লাগে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। গোলাপশাহ মাজার থেকে দোহারের মৈনট ঘাটে সরাসরি বাসে যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা।

ঢাকার বসিলা ব্রিজ পার হয়ে কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া, আটিবাজার হয়ে নবাবগঞ্জ চৌরঙ্গী পেড়িয়ে দোহারের কার্তিকপুর বাজার থেকে বামে গেলে মৈনট ঘাট। তারপর সোজা গেলে বাহ্রাঘাট। আবার বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়েও পৌঁছানো যায় একই গন্তব্যে।

জেএমএস/জেআইএম