বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন পরিকল্পনায় চমক দেখাবেন খালেদা

টানা ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি আবারো ঘুরে দাঁড়াতে চায়। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছেন দলটির চেয়াপারসন খালেদা জিয়া। সম্প্রতি লন্ডনে বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারমান তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন কর্মপরিকল্পনাও চূড়ান্ত করেছেন তিনি। খালেদা জিয়ার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে জাগো নিউজে প্রকাশিত হচ্ছে ধারাবাহিক প্রতিবেদন। এ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ শেষ পর্ব।একমাত্র বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবার দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ঢেলে সাজাবেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন থেকে ফিরে দলের নেতাকর্মীদেরকে এমনটাই আভাস দিয়েছেন তিনি।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের ৯টি অঙ্গ ও দুইটি সহযোগী সংগঠনের সবগুলোতেই ক্রমান্বয়ে নজর দেবেন খালেদা। তবে বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে খ্যাত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং যুবদল, শ্রমিকদলসহ প্রথম সারির কয়েকটি সংগঠনে দ্রুত নতুন কাঠামোতে নিয়ে আসবেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।  এ লক্ষ্যে দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে তিনি লন্ডন থাকা অবস্থায় আলাপ আলোচনাও করেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের শীর্ষ এক নেতা জানান, রাজপথে ছাত্রদলের ব্যর্থতা স্পষ্ট। এটা নিয়ে যুক্তি দেখানোর কিছুই নেই। ছাত্রদলের এমন ব্যর্থতায় নাখোশ দলের চেয়ারপারসন এবং বিএনপির ভবিষৎ কাণ্ডারি তারেক রহমান।তিনি আরো বলেন, এজন্য বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে সর্বনিম্ন তিনমাস ও সর্বোচ্চ পাঁচ মাসের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে খালেদা জিয়ার কাছে। আহ্বায়ক কমিটিটি যথাসময় নিয়মিত ছাত্রদের মধ্যে সত্যিকারার্থে যাদের দলের জন্য ত্যাগ রয়েছে তাদের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দেবে।  এদিকে, যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কমিটি হওয়ার পর থেকেই কোনো কথা নেই। কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখছেন না। বিষয়গুলো খালেদা জিয়াকে অবহিত করা না হলেও সংগঠনটির করুণ অবস্থা সম্পর্কে সম্প্রতি অবগত হয়েছেন তিনি। তাই এ সংগঠনটি নিয়েও বিকল্প চিন্তা করছেন খালেদা।পাশাপাশি দলের বাকি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের (জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধ দল, মহিলা দল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস, কৃষকদল, স্বেচ্চাসেবক দল, তাঁতী দল, ওলামা দল, মৎস্যজীবী দল, শ্রমিক দল) অবস্থাও নাজুক প্রায়।তাই দ্রুত সবগুলো সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে সত্যিকারের শক্তি জানান দিতে চায় বিএনপি প্রধান। এজন্য সিন্ডিকেটের কবল থেকে বেরিয়ে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসবেন তিনি।এদিকে, সরকারে দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে এখনো চূড়ান্ত কোনো পরিকল্পনা নেয়া না হলেও দিনটিকে ঘিরে কর্মসূচি পালনের চিন্তা করছে বিএনপি। জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির আগেই বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন খালেদা জিয়া।তবে দলের একটি সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে সরকারকে বড় ধরনের একটি ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করবে বিএনপি। কেননা বর্তমানে কোন ইস্যু নিয়ে সেই অর্থে রাজপথে আন্দোলনের সুযোগ না থাকলেও ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনে আন্দোলনের যাওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, পৌর নির্বাচনের কারণে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে দলকে শক্তিশালী করতে টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এজন্য দলের একেক শীর্ষ নেতাকে তিনি ভাগ করে দায়িত্ব দিয়েছেন। সব কিছু ঠিকমতো হলে যথাসময়ে হয়তো ফের রাজপথে সক্রিয় হবে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পরই তো পৌরসভা নির্বাচন চলে এসেছে। তাই নির্বাচন নিয়ে কাজ চলছে। তবে এর পাশাপাশি দল গুছানোর কাজও অব্যাহত রয়েছে। ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে বিএনপির কোন কর্মসূচি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই কর্মসূচি থাকবে। সময় হলে জানানো হবে।এমএম/এসএইচএস/এএইচ/আরআইপি

Advertisement