দেশজুড়ে

স্ত্রীর স্পর্শকাতর স্থান ঝলসে দিল স্বামী

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলায় অ্যাসিড দিয়ে স্ত্রীর স্পর্শকাতর স্থান ঝলসে দিয়েছে তার স্বামী। সোমবার গভীর রাতে উপজেলা গুয়ারেখা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসিডদগ্ধ গৃহবধূ কোহিনুর বেগম (৪০) বর্তমানে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  তিনি উপজেলার গুয়ারেখা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস শিকদারের স্ত্রী। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী অ্যাসিড নিক্ষেপকারী কুদ্দুস শিকদারকে (স্বামী) মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। চার সন্তানের জননী কোহিনুর বেগম জানান, ছোটখাট পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই তার স্বামী কুদ্দুসের সঙ্গে ঝগড়া হত। এ ঘটনায় কুদ্দুস তাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করত। তাকে এভাবে মারধর করায় দুই মাস আগে তিনি একই গ্রামে পার্শবর্তী তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। এর আগেও তাকে মারধর করে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করেছে কুদ্দুস। এ নিয়ে থানায় মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তখন এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান বিষয়টি সমঝোতা করে দিলে তিনি স্বামীর সংসারে ফিরে এসেছিলেন। বর্তমান চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুরকে জানিয়েছিলেন এই স্বামীর সঙ্গে আর সংসার করতে পারছেন না তিনি। তাই বিষয়টি মিমাংসার জন্য সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন চেয়ারম্যান। ঘটনার দিন কোহিনুর তার দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন। তিনি আরও জানান, সালিশ ব্যবস্থার কথা শুনে মারাত্মকভাবে ক্ষেপে যায় কুদ্দুস। ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তার শোবার ঘরের টিনের বেড়া কেটে প্রবেশ করে কুদ্দুস। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায় তার স্পর্শকাতর স্থানে এসিড নিক্ষেপ করে কুদ্দুস। এসময় তার চিৎকারে দুই মেয়ে জেগে ওঠে এবং তাদের বাবা কুদ্দুসকে দেখে ফেলে। তবে রাতে কেউ কুদ্দুসকে আটক করতে পারেনি। পরে এলাকাবাসীর কাছে আশ্রয় নিতে গেলে কুদ্দুসকে মারপিট করে স্থানীয় পাইটকেল বাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের হাতে সোপর্দ করে তাকে।  এদিকে মঙ্গলবার সকালে কোহিনুরের আত্মীয়রা তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছে। এ ব্যাপারে পিরোজপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ননী গোপাল বলেন, ওই হাসপাতালের ডা. ফারহানা রহমান কোহিনুরকে দেখেছেন। তিনি ফারহানার উদ্বৃতি দিয়ে জানান, অ্যাসিড নিক্ষেপে কোহিনুরের স্পর্শকাতর স্থান এবং দুই উরু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আশা করেন কোহিনুরের চিকিৎসা পিরোজপুরেই সম্ভব। এ ব্যাপারে স্বরূপকাঠি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন জানান, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোহিনুরের স্বামী কুদ্দুসকে আটক করেছেন। স্বরূপকাঠি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।হাসান মামুন/এমএএস/পিআর

Advertisement