সকালে গোসল সেরে মিষ্টিমুখ করে নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া, বাসায় আগত অতিথিদের খাবার পরিবেশন, গল্প-গুজব, আর শিশুদের রঙিন জামা গায়ে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ঢুঁ মেরে সালামি আদায়— এগুলোই প্রচলিত ঈদ উদযাপনের দৃশ্য। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে মানুষ এখন ঘরবন্দি। সংক্রমণের আশঙ্কায় সরকারি নির্দেশে ঈদগাহে নামাজ হয়নি। নামাজ শেষে কোলাকুলিও বন্ধ।
Advertisement
এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে দেশের মানুষ। কিন্তু শিশুরা ঈদের পোশাক পরে ঘরে বসে আছে। করোনার ভয়ে সেরকম কেউ কারও বাসায় যাচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ঘুরে মুরব্বিদের কাছে সালামি নিতে না পেরে শিশুদের মন খারাপ। অধিকাংশ শিশু অভিভাবকের কাছে বাইরে যাওয়ার বায়না ধরে ব্যর্থ হয়ে উল্টো প্রশ্ন করে, ঈদের দিনটা কীভাবে কাটাব?
করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে লকডাউন অব্যাহত রয়েছে। বন্ধ আন্তঃজেলা পরিবহন চলাচল। কিন্তু, কয়েক দিন ধরে মানুষ বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে গিয়েছে। আজ ঈদের দিন সকালেও গ্রামের বাড়ি ফেরা অব্যাহত আছে। গত কয়েক দিনে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে যাওয়ায় রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। তাছাড়া করোনা সংক্রমণের ভয়ে ঈদের দিন যে শিশুর দল পথে বের হতো, তাদের সিংহভাগই ঘরবন্দি। ফলে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তাঘাটেই সুনসান নীরবতা।
শুক্রবার বেলা ১১ থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের উপস্থিতি অনেক কম। সীমিত পরিসরে বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশা চলছে। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে যানবাহনগুলো দ্রুত গতিতে ছুটে যাচ্ছে। নীলক্ষেত এলাকায় অন্যান্য দিন বাসগুলো যাত্রীর আসায় বেশ কিছুক্ষণ স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করলেও, আজ যাত্রী না থাকায় একটু থেমেই ছুটে যাচ্ছে।
Advertisement
করোনার কারণে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে না গেলেও, নগরবাসীর অনেকেই স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে আজিমপুর, জুরাইন ও রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন কবরস্থানে ছুটে আসেন। ঈদের দিন হওয়ায় জুমার নামাজ শেষে কবরস্থানে ভিড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন কবরস্থানের নিরাপত্তারক্ষীরা।
এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ