ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। গত সোমবার থেকে অব্যাহত ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন শিশু ও ১১ জন নারী। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৫৮০ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।
Advertisement
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রেখেছে। বিমান হামলা ও গোলা বর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের বাহিনী। গাজা থেকে রকেট হামলা অব্যাহত রেখেছে হামাস।
এদিকে এপির খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে কমপক্ষে তিনটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রকেটগুলো বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ইসরায়েল সীমান্তের নাকৌড়ার উত্তরে ক্লাইলেহ অঞ্চল থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, লেবানন থেকে তিনটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল, যা গালীল উপকূলে ভূমধ্যসাগরে পতিত হয়।
গাজা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক সাফওয়াত আল কাহলআউত জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনারা সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সীমান্তে কোনো সেনা অবস্থান নেয়নি।
Advertisement
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে বিপুল পরিমাণ সেনা ও ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। সেখানে স্থল অভিযান চালানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজা সীমান্তে দুটি পদাতিক ও একটি সাঁজোয়া ইউনিট মোতায়েন করে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে আরও সাত হাজার সেনাকে প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে।
এদিকে হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ভারতীয় নারী ও ইসরায়েলি এক সেনা রয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক ইসরায়েলি।
গত ১০ মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে গাজা উপত্যকায় সিরিজ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। হামলার প্রথম দিনে তিন শিশুসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়। দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী এবং শেখ জাররাহ এলাকায় অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের উত্তেজনা চলছিল। এর মধ্যে আল-আকসা মসজিদে ঢুকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায়।
Advertisement
পবিত্র রমজানের জুমাতুল বিদা এবং পবিত্র রাত শবে কদরেও আল-আকসায় তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা এর প্রতিবাদ করে আসছেন। এর মধ্যেই গত সোমবার প্রতিশোধ হিসেবে হামাস ইসরায়েলে দিকে রকেট হামলা চালায়। তারপর থেকে অব্যাহত বিমান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
এর আগে গত সোমবার ভোররাত থেকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ঢুকে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। এতে বহু ফিলিস্তিনি আহত হয়। এসময় ফিলিস্তিনিদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি পুলিশ ও সেনারা।
এমএসএইচ/এমকেএইচ