দেশজুড়ে

বুড়িমারী দিয়ে দেশে ফিরলেন শিক্ষার্থীসহ ১৩ জন, কোয়ারেন্টাইনে ১৯৮

করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের পর থেকে দেশটিতে আটকেপড়া শিক্ষার্থীসহ ১৯৮ জন বাংলাদেশি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। তাদের সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত গেছেন ১০১ জন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বিকেল ৩টায় ভারত থেকে ফেরত আসা শিক্ষার্থীসহ ১৩ বাংলাদেশিকে বুড়িমারী ও লালমনিরহাটে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলে জানান বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন।

বুড়িমারী অভিবাসন পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় ২৬ এপ্রিল থেকে এই স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সেই দেশে অবস্থান করা যেসব বাংলাদেশির ভিসার মেয়াদ ১৫ দিন বা তারও কম রয়েছে, তাদের জন্য যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়। ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বিকেল পর্যন্ত ১৯৮ জন দেশে ফিরেছেন। একই সময়ে ভারতে ফিরে গেছেন ১০১ জন।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে আসা শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশি নাগরিকদের পাঁচটি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ নিজ খরচে থাকতে হবে সেখানে। আর তা দেখভাল করবে স্থানীয় উপজেলা ও থানা প্রশাসন। এদের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের প্রায় ৪৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরে তিনটি আবাসিক হোটেলে রয়েছে ৪৬ জন, পাটগ্রাম উপজেলা শহরের দুইটি আবাসিক হোটেলে রয়েছে ৪৫ জন। ভারত থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরা কয়েকজন বাংলাদেশিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

Advertisement

এদিকে ভারতের দার্জিলিংসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যর থেকে আসা ঢাকা, কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এলাকার প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী বুড়িমারী ও লালমনিরহাট শহরের আবাসিক হোটেল প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি যাত্রীদের লালমনিরহাট জেলা সদরসহ পাটগ্রাম ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাঁচটি আবাসিক হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। তাদের দেখভালের জন্য থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ রাখা হয়েছে, যাতে তারা বাইরে বের হতে না পারেন।

বুড়িমারী স্থল বন্দরের স্বাস্থ্য উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রাসেল আহম্মেদ জানান, ভারত থেকে আসা বাংলাদেশিদের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট এবং শরীরের তাপমাত্রা, ঠান্ডা, কাশি ও এলার্জিজনিত বিষয়গুলো আছে কি-না তা যাচাই করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা ভারত থেকে আসছেন, তারা করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়েই আসছেন। তারা পথিমধ্যে আক্রান্ত হচ্ছেন কি-না, সেটা জানার জন্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। ১৪ দিনের মধ্যে তাদের করোনার কোনো লক্ষণ বা সমস্যা দেখা না দিলে কোয়ারেন্টাইন শেষে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

Advertisement

রবিউল হাসান/এআরএ/জিকেএস