স্বাস্থ্যবিধি এবং যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে পর্তুগালের রাজধানী শহর লিসবনে বাংলাদেশিদের তত্ত্বাবধানে ইউরোপের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Advertisement
তাছাড়া বাণিজ্যিক নগরী পোর্তো, পর্যটন নগরী আলগার্ভ, কাশকাইশ, কোইমব্রাসহ বিভিন্ন শহরে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে মুসলমানদের সর্ব বৃহৎ উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর।
চলমান করোনা মহামারি ও লকডাউনের ফলে গত বছর এই ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারেনি তাই এই বছর ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করতে পেরে বাংলাদেশিসহ লিসবনের মুসলিম কমিউনিটি আনন্দ প্রকাশ করেছে।
লিসবনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত মাতৃ মনিজ পার্কের মাঠে ঈদের অন্যতম বৃহৎ জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫ হাজার মানুষ একত্রে নামাজ আদায় করে। জোবায়ের আহম্মেদের কোরআন তেলওয়াতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ঈদ উল ফিতরের নামাজ।
Advertisement
বাংলাদেশ ইসলামী সেন্টার বাইতুল মোকাররম জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক মাওলানা আবু সায়িদ ঈদ উল ফিতরের জামাত ও খুতবা পরিচালনা করেন, নামাজের পূর্বে ঈদ উল ফিতরের তাৎপর্য নিয়ে বয়ান করেন মাতৃ মনিজ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আলা উদ্দিন।
পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত মো. তারিক আহসান, দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব আবদুল্লাহ আল রাজি ও আলমগীর হোসেনসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং পর্তুগাল কমিনিটির বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারা এতে অংশগ্রহণ করেন। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিসহ এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির মানুষ ঈদ জামাতে অংশ নেয়।
জামাত শেষে রাষ্ট্রদূত উপস্থিত কমিউনিটি ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং এমন সুশৃঙ্খল ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাত আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটিসহ লিসবন সিটি করপোরেশন, স্থানীয় জোন্তা সান্তা মারিয়া মায়র এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এছাড়াও বাণিজ্যিক শহর পোর্তোর বাঙালি অধ্যুষিত রুয়া দে লউরেইরোর হযরত হামজা (রঃ) মসজিদে ঈদ উল ফিতরের দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পোর্তোর বাংলাদেশ কমিনিটির নেতারাসহ ঈদের জামাতে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি আফ্রিকা এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিভন্ন দেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ অংশ নেন।
Advertisement
নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বিবেচনায় এবারের ঈদের জামাতের পর ইসলামিক প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরা কোলাকুলি বা মুসাফা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেনি।
লিসবনের বাংলাদেশিদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পাজামা পাঞ্জাবিতে ঈদের ময়দানের দিকে ছুটে চলা যেন বাংলাদেশের কথাই মনে করিয়ে দেয় পর্তুগালের প্রবাসী বাংলাদেশিরা। স্থানীয় মাতৃ মনিজ পার্কসহ পোর্তোর রুয়া দে লউরেইরোর ঈদগাহ ময়দান প্রবাসের বুকে যেন এক খণ্ড বাংলাদেশ হয়ে ওঠে।
এছাড়া লিসবনের সেন্ট্রাল জামে মসজিদে দুইটি, ওধিবিলাসে একটি, দামাউয়ায় একটি, আমাদোরায় জামে মসজিদে, রিবাইরালো বাংলাদেশি জামে মসজিদ, লংগাইরা-আলমোগরাভ, আলগ্রাব এবং মিল পনতেসে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায়, কাসকাইস বাংলাদেশি জামে মসজিদে একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
জামাত শেষে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন- বাংলাদেশ ইসলামি সেন্টার লিসবন বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদের সভাপতি তাসলিম উদ্দিন রানা, মাতৃ মনিজ জামে মসজিদের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, পর্তুগাল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জহিরুল আলম জসিম, বিএনপির পক্ষে নজরুল ইসলাম শিকদার এমন সুশৃঙ্খল জামাত আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটিসহ লিসবন সিটি করপোরেশন, স্থানীয় জোন্তা সান্তা মারিয়া মায়র এবং সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন সহ ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এমআরএম/জিকেএস