ঈদ এলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরেই বিভিন্ন জেলার লাখ লাখ ঘরমুখো মানুষ রাজধানী ছাড়েন। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলে মুখর থাকে এই মহাসড়ক। কখনো কখনো এখানে যানজটের স্থবিরতায় বিঘ্নিত হতো ঈদযাত্রা। এখন সেই মহাসড়ক দূরপাল্লার গাড়িবিহীন যেন অনেকটাই নিঃসঙ্গতায় ডুবে আছে।
Advertisement
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দূরপাল্লার গাড়ি চালাচলের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ঈদুল ফিতরের আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকালের দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কয়েকটি স্থান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এটি ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বের হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবার সকালে এ মহাসড়কে কোনো দূরপাল্লার গাড়ি রাজধানী ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। মহাসড়ক জুড়ে রয়েছে ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও রিকশা। তবে সেগুলোও সংখ্যায় কম।
Advertisement
আগামীকাল (শুক্রবার) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ (লকডাউন) চলছে এখন। লকডাউন বহাল থাকবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে লোকজনকে কর্মস্থলে রাখার উদ্যোগ নেয় সরকার।
গত ৫ মে সর্বশেষ বিধিনিষেধ বাড়িয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ, শনির আখড়া, মাতুয়াইল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোনো দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। দূরপাল্লার বাস মূলত সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। সেখান থেকে কোনো বাস ছাড়ছে না।
Advertisement
ঢাকা ও আশেপাশের রুটের রজনীগন্ধা, শ্রাবণ, ঠিকানা, লাব্বাইক, অনাবিল, হিমালয়, মৌমিতা, মনজিল, এল এম লাভলী, মেঘলা, সিটি লিংক, বোরাক, কোমল পরিবহনের বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে সেগুলো ছিল সংখ্যায় কম। মাঝে মাঝে অনেকটাই শুন্য হয়ে পড়ছে আট লেনের এই মহাসড়ক।
বাসস্ট্যান্ডগুলোতেও ব্যাগ নিয়ে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা যায়নি। তবে ঢাকার আশপাশের জেলায় যাদের বাড়ি, এমন কিছু মানুষকে সড়কে দেখা গেছে।
এমনই একজন মো. শামসুদ্দিন। তিনি স্ত্রী ও ছোট ভাইসহ লাগেজ নিয়ে রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। শামসুদ্দিন বলেন, ‘আমি দাউদকান্দি যাব। ভেঙে ভেঙেই যাব। এখান থেকে সিএনজি দিয়ে যাব। তারপর আবার অন্য গাড়ি।’
কেউ কেউ মাইক্রোবাসে যাচ্ছেন গ্রামে। মহাসড়ক থেকে কিছুটা ভেতরে উত্তর রায়েরবাগে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে ছিল। এটি এখানকার বাসিন্দা সোহাগ মিয়ার পরিবারকে নিয়ে যাবে কুমিল্লা এলাকায়।
আরএমএম/এমএইচআর/এমকেএইচ