পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা চত্বরে বিজয় র্যালি সমাবেশে মঙ্গলবার এ দাবি জানিয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি। সার্ক থেকে পাকিস্তানের সদস্যপদ বাতিল ও জাতিসংঘ থেকে ওই দেশকে বহিষ্কারের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান উপাচার্য। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন প্রাঙ্গণস্থ অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সদস্যদের সমন্বয়ে এক বর্ণাঢ্য ‘বিজয় র্যালি’ বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে উপাচার্য উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। র্যালিতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বিপুল সংখ্যক সদস্য অংশ নেন। স্বাধীনতা চত্বরে উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় র্যালিতে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩০ লাখ শহীদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মাহুতির কথা স্মরণ করে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর চেতনা-সমৃদ্ধ যুদ্ধাপরাধী মুক্ত বাংলাদেশে সত্যনিষ্ঠ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সত্যের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তার আদর্শ হলো দেশকে ভালোবাসতে হবে, মানুষকে ভালোবাসতে হবে, আমাদেরও এ লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং বিজয় অর্জিত হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে পাকিস্তানিরা বিভিন্ন ধরণের অন্যায়-অত্যাচারে লিপ্ত ছিল ও ঠান্ডা মাথায় অত্যন্ত নির্মমভাবে বুদ্ধিজীবীসহ অনেক সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ ছিল বিশ্ব সভ্যতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আজ তারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে। অথচ পাকিস্তান কর্তৃক গঠিত হামিদুর রহমান কমিশনেই গণহত্যার দালিলিক তথ্য প্রমাণ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এহেন বিবৃতি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের হস্তক্ষেপ। এরপর পাকিস্তানিদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার কোনো সুযোগ নেই। তাই অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হোক। সার্ক থেকে পাকিস্তানের সদস্যপদ বাতিল করা হোক। মানবাধিকারের প্রবক্তা জাতিসংঘ থেকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে বহিষ্কারের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। এই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের, ছাত্রদের, বাংলাদেশের সকল জনগণের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক থাকবে না ঘোষণা দিয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র-প্রতিনিধি পাকিস্তানে যাবে না। পরিশেষে স্বাধীনতা চত্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তির গান, বিজয়ের গান। এমএইচ/একে/আরআইপি
Advertisement