দেশজুড়ে

ঈদ আনন্দ নেই সিরাজগঞ্জের ১৫ হাজার পরিবহন শ্রমিকের

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে দূরপাল্লার আন্তঃজেলার বাসগুলো বন্ধ থাকায় ঈদ আনন্দ নেই সিরাজগঞ্জ জেলার ১৫ হাজার পরিবহন শ্রমিকের পরিবারে। প্রতি বছর এদিনগুলোতে শ্রমিকদের পরিবারে আনন্দ থাকলেও এবার কষ্ট ও দুর্ভোগের সীমা নেই তাদের।

Advertisement

এই দুঃসময়ে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের পাশে না পাওয়ার অভিযোগ করছেন শ্রমিকরা। তারা বলছেন, নেতারা তাদের নানা কাজে ব্যবহারে করে কিন্তু এই সংকটকালে তারা কোনো সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ডের পরিবহন শ্রমিক আবুল কালাম, শামীম হোসেন, মুন্না সেখ ও মামুন জানান, সরকারের বেধে দেয়া লকডাউনে আমরা চরম বিপদে পড়েছি। লোকাল বাসগুলো ছেড়ে দেয়া হলেও দূরপাল্লার বাসগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতি বছর ঈদে আমাদের পরিবারে আনন্দ থাকলেও এবার পরিবারে আনন্দ নেই। স্ত্রী-সন্তানদের কোনো নতুন জামা-কাপড় দিতে পারেনি। প্রতিদিন বাড়িতে ফিরলেই সন্তানদের জামা-কাপড়ের আবদার শুনতে হয়। লকডাউনের এতদিন পরও সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পাইনি আমরা।

কোনো সহায়তা না পাওয়ার কথা জানিয়ে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মাছুমপুর গ্রামের অভি এন্টার প্রাইজের ড্রাইভার সাজু হোসেন বলেন, ‘লকডাউন দেয়ার পর থেকে কাজ বন্ধ। পকেটে একটা টাকা নাই। এই বিপদে কেউ চাল কেনার টাকা দিয়েও সাহায্য করেনি।’ এমন পরিস্থিতিতে যে ঈদের সেমাই কিনবো সেই টাকাটাও নাই। কী যে অবস্থায় আছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সরকারের পক্ষ থেকে এত বরাদ্দ দেয়া হলেও আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।

Advertisement

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সড়ক সম্পাদক গ্যাদা শাহীন বলেন, সরকার থেকে আমাদের শ্রমিকদের জন্য কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। সিরাজগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে আমরা যতটুকু পেরেছি শ্রমিকদের সহযোগিতা করেছি।

সিরাজগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বিভিন্ন রুটে কর্মরত রয়েছেন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে আমরা নেতা নির্বাচিত হয়েছি। সরকার কর্তৃক টানা লকডাউনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ জেলায় কর্মরত ১৫ হাজার শ্রমিক।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের দুর্দিনে সরকার তাদের পাশে নেই। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় আমরা শ্রমিকদের মুখে ঈদের হাসি ফোটাতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, জেলায় কর্মরত ১৫ হাজার শ্রমিকের মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ২৫০ পরিবার, পুলিশ সুপার থেকে ৩৫০ পরিবার এবং জেনিন এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে ৪০০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুই হাজার ৫০০ টাকার অর্থ-সহায়তা সামান্য সংখ্যক শ্রমিক পেলেও বেশিরভাগই পাননি। প্রতি বছর ঈদগুলোতে তাদের বাড়তি আয়ের সুযোগ থাকলেও এবার তারা সবদিক থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

Advertisement

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এআরএ