রমজান শেষে যে রাত আসে কিংবা যে রাত পেরুলেই ঈদ উদযাপিত হয় সেই রাতই ‘চাঁদ রাত’ হিসেবে পরিচিত। এ রাতের ইবাদত-বন্দেগির ফজিলত ও মর্যাদা রমজানের তুলনায় কম নয়। কেননা এ রাতেও অব্যাহত থাকতে রহমত ও সৌভাগ্য।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা বান্দার এ (চাঁদ) রাতের ইবাদত-বন্দেগি এবং কোনো দোয়াই ফিরিয়ে দেন না। এ রাতে বান্দা যা চায়; তা-ই পায়। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমআর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, অর্ধ শাবানের রাত এবং দুই ঈদের রাতসহ এ পাঁচ রাতে কোনো দোয়া করে; সে রাতে তার কোনো আবেদনই ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)
ঈদের আগের রাত তথা চাঁদ রাতের ইবাদতকারীর জন্য আল্লাহ তাআলা জান্নাত ওয়াজিব করে দেন। হাদিসের এক বর্ণনায় ওঠে এসেছে-
Advertisement
হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদতের মাধ্যমে) জাগ্রত থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। তাহলো-
১. জিলহজ মাসের ৮ তারিখের রাত৷
২. জিলহজ মাসের ৯ তারিখের রাত (আরাফার রাত)
৩. ঈদুল আজহার রাত।
Advertisement
৪. ঈদুল ফিতরের রাত এবং
৫. অর্ধ শাবানের রাত।’ (আত তারগিব ওয়াত তারহিব)
বিশেষ মর্যাদা
চাঁদ রাতের ইবাদতকারীদের সম্পর্কে একটি বিশেষ মর্যাদা ঘোষণা করা হয়েছে। এ রাতের ইবাদতকারীদের অন্তর মরবে না। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
- হজরত আবু উমামা বাহেলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে সাওয়াব পাওয়ার নিয়তে ইবাদত করবে, তার অন্তর সেদিনও জীবিত থাকবে, যেদিন সকল অন্তরের মৃত্যু ঘটবে।’ (ইবনে মাজাহ)
- হজরত উবাদা ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাতকে (ইবাদতের মাধ্যমে) জীবিত রাখবে, তার অন্তরও সেই দিন মরবে না, যেদিন অন্যদের অন্তর মরে যাবে।’ (আল মুজামুল আওসাত)
মুমিন মুসলমানের উচিত, ৩টি বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার লক্ষ্যে ঈদুল ফিতরের আগের রাত তথা চাঁদ রাত ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা। এ ইবাদতের ফলে বিশেষ ৩টি মর্যাদা পাবে রোজাদার মুমিন। তাহলো-
১. এ রাতের কোনো দোয়া আল্লাহ ফেরত দেবেন না।
২. এ রাতের ইবাদতকারীর জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
৩. এ রাতের ইবাদতকারীর অন্তরের মৃত্যু হবে না।
সুতরাং চাঁদ রাতের মুমিন মুসলমান রোজাদার রাতব্যাপী ইবাদত-বন্দেগি করেবে। সাধ্যানুযায়ী নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, তাওবাহ-ইস্তিগফার এবং দোয়া-দরূদ পড়ার মাধ্যমে অতিবাহিত করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈদুল ফিতরের আগের রাত তথা চাঁদ রাতের আমল-ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত রাখার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে বিশেষ ৩টি মর্যাদা অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস