বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হাঁচি দিলে এনবিআরের সর্দি লেগে যায়। এমন সুসম্পর্ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এনবিআর’র রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়্যারম্যান মো. নজিবুর রহমান। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে ‘ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন: চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড অফরচুনিটিস ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বারের প্রেসিডেন্ট হোসাইন খালেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা) ক্ষেত্রে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিশেষ নজর রাখেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত ডব্লিউটিএ’তে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও আমরা অনেক এগিয়েছি। তবে এটা সত্য যে, শুধু এনবিআর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বাস্তবায়ন করতে পারে না। এর সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়সহ সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ্ বিভাগ জড়িত আছে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি এনবিআরের সঙ্গে সব বিভাগের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। বিশেষ করে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। আমরা আসন্ন নাইরোবিতে ডব্লিউটিএ’র সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা থাকছি। সেখানে এই ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন সম্বন্ধে আরো বিশদভাবে আলোচনা হবে বলে যোগ করেন তিনি।তিনি বলেন, এনবিআরের পুরনো স্টাডি আরে অনুসরণ করা হবে না। এটা একটি নতুন এনবিআর, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৫পি’র আওতায় কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সকল প্রকার বৈধ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু কোনো প্রকার অবৈধ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা খুবই কঠোর। মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক অমিতাভা চক্রবর্তী বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন খুব জটিল একটা বিষয় নয়। বিভিন্ন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। এর এ,বি,সি ক্যাটাগরি রয়েছে। সেগুলো আগে চিহিৃত করতে হবে। একইসঙ্গে ডব্লিউটিএ’র এগ্রিমেন্টগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা কোনো ক্যাটাগরিতে আছি। এরপর বাস্তবায়নের জন্য এনবিআরসহ দেশের অর্থবিভাগ, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, স্থলবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বাস্তবায়নের জন্য আমাদের দেশে এখনো ৪ ধরনের সমস্যা বিদ্যমান আছে। এর মধ্যে প্রথম সমস্যা নীতিগত। দ্বিতীয়ত অপারেশনাল সমস্যা, যা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি না। তৃতীয়ত সমস্যা হচ্ছে এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বয় করতে পারি না। আর চতুর্থ হচ্ছে অনেক ব্যবসায়ী ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের সম্পর্কে জ্ঞনের অভাব। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। যার কারণে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারছি না।তিনি বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বাস্তবায়নের জন্য কি পরিমাণ অভ্যন্তরীণ এবং বর্হিসম্পদের প্রয়োজন তা কর্তৃপক্ষকে নির্ধারণ করতে হবে। নতুবা এর বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটি চালু করায় ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক ও সুযোগ বাড়বে। একইসঙ্গে রাজস্ব ব্যয় কমবে বলে জানান তিনি।এসআই/জেডএইচ/এমএস
Advertisement