গোবর কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর, এমন বিশ্বাসকে নাকচ করে দিয়েছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে গোবরের কার্যকারিতার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। একই সঙ্গে এটি অন্যান্য রোগ বিস্তারের ঝুঁকি বাড়ায়। খবর- রয়টার্স।
Advertisement
করোনাভাইরাস মহামারিতে ভারত এখন বিপর্যস্ত। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২২ লাখ ৬৬ হাজারেরও বেশি মানুষ এই মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জনের। বিশেষজ্ঞদের মতে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ৫ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বেশি হতে পারে। আর দেশটির সর্বত্র এখন হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন আর ওষুধের সঙ্কট। বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন অনেকে।
এরই মধ্যে গুজরাটের অনেক বাসিন্দা সপ্তাহে একদিন গোবর ও গোমূত্র শরীরে মেখে গোশালায় থাকছেন। তাদের বিশ্বাস এর ফলে তারা করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাবেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে গোবর একটি পবিত্র বস্তু। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অনেক হিন্দু পরিবারে ঘর পরিষ্কারের জন্য গোবর ব্যবহৃত হয়। তাদের বিশ্বাস, গোবরের রয়েছে রোগ প্রতিরোধ এবং জীবাণুনাশক ক্ষমতা।
Advertisement
একটি ওষুধ কোম্পানির অ্যাসোসিয়েট ম্যানেজার পদে কর্মরত গৌতম বরিসা বলেন, আমরা দেখেছি...এমনকি চিকিৎসকরাও এখানে (গোশালা) আসেন। তাদের বিশ্বাস এর ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং তারা এরপরে নির্ভয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারবেন।
শরীরে গোবর মেখেই গত বছর তিনি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন বলে দাবি করেন এই ব্যক্তি।
তবে ভারতসহ বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকরা এই পদ্ধতির শরণাপন্ন না হতেই পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা এবং এর ফলে জটিল শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ডা. জেএ জয়ালাল বলেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে গোবর এবং গোমূত্রে কার্যকারিতার কোনো শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটা পুরোপুরি বিশ্বাসনির্ভর।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া শরীরে গোবর মাখার স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে। এর মাধ্যমে পশু থেকে মানবদেহে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
এছাড়া, একত্রে গোবর মাখতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণেরও ঝুঁকি রয়েছে।
এসএস/জেআইএম