ফুটবলারদের জন্য সবচেয়ে গৌরবময় পুরস্কার। ফিফা ব্যালন ডি’অর। গত সাত বছর ধরে যে পুরস্কারের লড়াইটা সীমাবদ্ধ মেসি এবং রোনালদো নামক এই গ্রহের দুই সেরা ফুটবলারের মধ্যে। এবারও এই দুই জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি। তবে, ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, সেরা তিনের তালিকা। সবাই জানতে চায়, এবার মেসি-রোনালদোর সঙ্গে তৃতীয় ব্যাক্তিটি কে?অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো রোনালদোই বাদ পড়ে যাবেন ব্যালন ডি’অরের সেরা তিনের তালিকা থেকে। কারণ, বার্সেলোনার ত্রি-মুর্তি যেভাবে একের পর এক বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছেন এবং বার্সেলোনাকে সাফল্য এনে দিচ্ছেন, তাতে করে তালিকাটা আটকে যেতে পারে শুধুমাত্র ন্যু ক্যাম্পেই। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের মধ্যেই।তবে না, খাঁটি বার্সা সমর্থকদের একরাশ হতাশায় পুড়তে হলো। মেসি-রোনালদো ঠিকই আছেন। তালিকায় তৃতীয় ব্যক্তিটি মেসিরই সতীর্থ, নেইমার ডি সিলভা জুনিয়র। ২৩ জনের তালিকা থেকে ২০জনকে ছাঁটাই করে নামিয়ে আনা হলো তিনজনে। আগামী ১১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জুরিখে, ফিফার সদও দপ্তরে তুলে দেয়া হবে ২০১৫ সালের ফিফা বর্ষসেরা ফ্টুবলারের পুরস্কার, ব্যালন ডি’অর।শনিবারই নেইমার বলেছিলেন, বিশ্ব সেরা ফুটবলার বা ব্যালন ডি’অর জেতার জন্য তিনি ফুটবল খেলেন না। খেলেন ক্রমাগত ফুটবলে নিজেকে উন্নত করার জন্য। তবে নেইমার কিন্তু পাশাপাশি বলেছিলেন, তিনি মনে করেন বার্সেলোনার ত্রিফলা, এমএসএন (মেসি, সুয়ারেজ, নেইমার) এবার ব্যালন ডি’অরের মঞ্চে থাকার সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার। যাদের এ বছর সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে গোলের সংখ্যা ১২৫। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের উরুগুইয়ান সতীর্থ চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেলেন না। গতবছর এই তালিকায় তৃতীয় ব্যাক্তি হিসেবে ছিলেন সুয়ারেজ। তাতে কিছুটা মনখারাপ হলেও বার্সেলোনার সমর্থকরা আবার উচ্ছ¡সিত ‘সাওপাওলোর ওয়ান্ডারকিড’ প্রথমবার ‘ফাইনাল থ্রি’তে আসায়। এ তালিকায় নাম উঠে আসায় এবার বার্সেলোনাকে দু’মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করতে হবে নেইমারের সাবেক ক্লাব স্যান্তোসকে। দু’বছর আগে নেইমার ব্রাজিলিয়ান ক্লাব থেকে বার্সায় আসার সময় চুক্তিটা তেমনই ছিল।সর্বশেষ টানা দু’বার ট্রফিটা যার দখলে ছিল, সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে লড়াইটা মূলতঃ নেইমার নয়, আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির সঙ্গে। যিনি গত মওসুমে বার্সেলোনাকে ত্রিমুকুট উপহার দিয়েছেন এবং চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার অনেক আগেই ব্যালন ডি’অরটা যে এবার মেসিই পাচ্ছেন, সে ব্যাপারে অনেকেই একমত। এমনকি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও। কয়েক দিন আগেই সিআর সেভেন বলেছিলেন, ‘সত্যি বলতে আমার মনে হয়, এবার ট্রফিটা মেসিই পাবে। কেননা এই ট্রফিটা কার হাতে উঠবে সেটা ভোটের উপর নির্ভর করে। টুর্নামেন্ট জেতা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়, লিগ দখলে ব্যক্তিগতভাবে কতটা অবদান থাকল সেটাই বড় কথা।’ সঙ্গে সিআর সেভেন যোগ করেন, ‘হয়তো মওসুমটা আমার অন্যতম ফেভারিট ছিল। ইউরোপের অন্যতম সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছি; কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরো ব্যাপারটা সেই ভোটের উপরই। তবে আমি এ নিয়ে খুব একটা ভাবছিও না। কেননা আগেই বলেছি, টানা তিনবার ব্যালন ডি’অর জিতব এটা ভাবিনি।’এ বছর সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ইউরোপের সেরা পাঁচটি লিগের মধ্যে তিন সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালতো (৪৫), মেসি (৪০) আর নেইমারের (৪১) মধ্যে ব্যলন ডি’অর কার হাতে উঠবে সেটা নির্ভর করছে পুরুষদের জাতীয় দলের অধিনায়ক, কোচ এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের ভোটের উপর।এ বছরের মেয়েদের বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে চূড়ান্ত তিন জনের তালিকায় জায়গা পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের কার্লি লয়েড, জাপানের আয়া নিয়ামা এবং জার্মানির সেলিয়া সাসিচ (জার্মানি)। বর্ষসেরা গোলের পুসকাস পুরস্কারের দৌড়ে আছেন ইতালিয়ান সিরি-আ ক্লাব রোমার আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি, মেসি, ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ওয়েন্ডেল লিরা। বর্ষসেরা কোচের লড়াইয়ে সেরা তিন বায়ার্ন মিউনিখের পেপ গার্দিওলা, বার্সেলোনার লুইস এনরিকে ও চিলির জর্জ সাম্পাওলি।আইএইচএস/পিআর
Advertisement