আন্তর্জাতিক

করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার করে সেই তাবলিগ জামাতই ভাসছে প্রশংসায়

করোনাভাইরাস মহামারিতে ধর্মীয় সমাবেশ করে রীতিমতো ‘অপরাধী’ আখ্যা পেয়েছিল ভারতের সুন্নি ইসলামি সংগঠন তাবলিগ জামাত। এমনকি দেশদ্রোহ এবং হত্যা মামলা পর্যন্ত হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে। সেসব বিতর্ক পেছনে ফেলে কোভিডে বিপর্যস্ত ভারতে মরদেহ সৎকারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সংগঠনটি। এক চিতায় যাতে ১০ জনের মরদেহ তুলতে না হয়, যাতে ধর্মীয় রীতি মেনেই প্রতিটি মরদেহের সৎকার হয়, সেই কাজে হাত লাগিয়েছে এই মুসলিম সংগঠন।

Advertisement

কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপাতিতে কোভিড রোগীদের সৎকারের কাজ করছে তাবলিগ জামাত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মরদেহই সৎকার করছে তারা।

জানা গেছে, গত এপ্রিলে তিরুপাতিতে দৈনিক প্রায় ১৫টি করে মরদেহ দাহ করেছেন তাবলিগের স্বেচ্ছাসেবকরা। আর মহামারির শুরু থেকে সবমিলিয়ে ৫৬৩টি মরদেহের সৎকার হয়েছে তাদের হাতে। শুধু এই কাজের জন্যই তিরুপতি ইউনাইটেড মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে কোভিড-১৯ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি (জেএসি) গঠন করেছে তারা।

তাবলিগ জামাতের এক সক্রিয় সদস্য বলেন, ‘গত বছর মহামারির দায় আমাদের ওপর চাপানো হয়েছিল। আর এখন আমাদের প্রশংসা শুনছি।’

Advertisement

তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিরুপাতিতে তাদের ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক তিনটি আলাদা দল গঠন করে কাজ করছেন। এপ্রিল মাসে প্রতিটি দলই কমপক্ষে ১৫টি করে শব দাহ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ওই তাবলিগ সদস্য আরও জানান, বয়স্কদের মরদেহই বেশি আসে। এখন অল্পবয়সীদের মরদেহও দাহ করতে হচ্ছে। পরিবারগুলোকে স্বান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই তাদের। হিন্দু, মুসলিম কিংবা খ্রিস্টান, ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী রীতিনীতি মেনেই দেহ শেষ বিদায় জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে তাবলিগ জামাত। তাদের নিজেদেরই পিপিই কিটের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এদিকে, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কিছু অমুসলিম যুবকও।

গত বছর ভারতে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে দিল্লিতে একটি ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করায় অভিযোগ ওঠে তাবলিগ জামাতের দিকে। ওই সমাবেশ থেকে দুইদিনে ৬৪৭ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে চাপের সম্মুখীন হয় এই মুসলিম সংগঠনটি। যদিও পরে বোম্বে হাইকোর্ট বলেন, ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় তাবলিগ জামাতে অংশ নেয়া বিদেশি মুসল্লিদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ছড়ানোর জন্য দোষারোপের মাধ্যমে তাবলিগকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে

যদিও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাবলিগ জামাতের শত শত সদস্য প্লাজমা দান করেছেন

Advertisement

এসএস/এমএস