আন্তর্জাতিক

যোগীর রাজ্যের যমুনায় এতো লাশ আসছে কোথা থেকে?

করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন করার অভিযোগ ছিল ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে উঠে এসেছে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ। বলা হচ্ছে, করোনায় কার্যত মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে রাজ্যটির যমুনা নদী সংলগ্ন গ্রামগুলোতে। কিন্তু অনেক পরিবারেরই সৎকারের সামর্থ্য নেই। তাই স্বজনদের মরদেহ ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে নদীতে।

Advertisement

সোমবার (১০ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দু-একটি নয় এক দিনে প্রায় এক ডজন মরদেহ ভাসতে দেখা গেছে যমুনার বুকে।

হামীরপুর জেলায় কানপুর-সাগর মার্গ সংযোগকারী একটি সেতুর ওপর থেকে যমুনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার ওই দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, যমুনায় বেশকিছু মরদেহ ভেসে যাচ্ছে। নদীর কিনারায় আটকে আছে দু’-একটি নিথর দেহ। সেখানে ভিড় করেছে কাকের দল। পাশে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু-মহিষও। মরদেহ পাশ কাটিয়েই পানি পান করছে গবাদিপশুর দল।

Advertisement

এদিকে, বিষয়টি নজরে পড়তেই সেতুর ওপর যান চলাচল থেমে যায়। রেলিংয়ের ওপর দিয়ে ঝুঁকে পড়েন চলাচলরত মানুষ। বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকেও। ট্রাক্টর নিয়ে নদীর তীর থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করে সৎকার করেন স্থানীয়রা। ওই দুটি মরদেহের একটি আধপোড়া অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। একসঙ্গে এত মরদেহ কোত্থেকে এলো। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি-না, এমন হাজারো প্রশ্ন উঠছে। শুধু তাই নয়, মরদেহগুলো যদি করোনা রোগীদেরই হয়, সেক্ষেত্রে নদীর পানি কতখানি দূষিত হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছন অনেকে।

কানপুর এবং হামিরপুরের জেলার সীমানা নির্ধারণ করে যমুনা। তবে স্থানীয়দের কাছে সেটি মোক্ষদায়িনী কালিন্দী নামে পরিচিত। মৃত্যুর পর মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার প্রথা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে সেখানে। স্থানীয়রা একে ‘জলপ্রবাহ’ বলেন। তবে এতদিন দুয়েকটি মরদেহ চোখে পড়লেও, এভাবে একসঙ্গে একডজন কখনোই দেখা যায়নি। সে কারণেই মরদেহগুলো করোনা রোগীদেরই বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।

তবে এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি। তবে উত্তরপ্রদেশে করোনার প্রকোপে যে হারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে স্থানীয়দের অভিযোগ উড়িয়ে দেননি হামীরপুরের এসপি অনুপকুমার সিংহ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে।

Advertisement

এসএস/এমএস