দেশজুড়ে

ঈদ উপহার না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামী-শাশুড়ি কারাগারে

সিলেটের ওসমানীনগরে শ্বশুরবাড়ি থেকে ঈদের উপহার না পাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

রোববার (৯ মে) দুপুরে হত্যা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে নিহতের বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন শনিবার (৮ মে) রাতে ওই দুজনকে আসামি করে ওসমানীনগর থানায় মামালা করেন। পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর বাড়ি থেকে নিহত শরিফা বেগমের (২০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত শরিফা নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মেয়ে। তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

তবে স্বামী ও শাশুড়ির দাবি, পরিবারের সবার অজান্তে শরিফা আত্মহত্যা করে। যদিও শনিবার দুপুরে তার স্বামীর বাড়ির নিজ ঘরের বিছানা থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের ভাই মামলা দায়ের করেন। আসামীদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৯ মাস আগে ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর ছেলে আরশ আলীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্লাহর ছোট মেয়ে শরিফার। বিয়ের কিছুদিন পর যৌতুকসহ নানা কারণে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগম তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। তবে শরিফা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তার পরিবার তাকে সহ্য করে শ্বশুরবাড়িতে থাকার কথা বলে।

পরিবারের অভিযোগ, রমজানে শরিফা ও আরশ আলী শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। এ সময় ইফতার দিতে দেরি করার অভিযোগ করে জামাই আরশ আলী। এছাড়া আলাদাভাবে সাজানো থালায় ইফতার না দেয়ায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন করেন তিনি আরশ আলী।

শুক্রবার (৭ মে) সন্ধ্যায় শরিফার বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ির লোকজনের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না আসা নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে শরিফাকে তার স্বামী ও শাশুড়ি মারধর করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাইকে ফোন করে জানান শরিফা। পর সাহরির সময়ে শরিফার মোবাইল বন্ধ পান তার ভাই-বোনরা।

Advertisement

শরিফার বড় বোন জানান, শুক্রবার রাতে শরিফার ফোন পেয়ে শনিবার দুপুরে জামাই ও বেয়াই বাড়ির লোকজনের জন্য ঈদের নতুন পোশাক কেনেন শরিফার পরিবার। দুপুরে তা নিয়ে শরিফার শ্বশুরবাড়িতে রওনা করেন বড় বোন। পথিমধ্যে খবর আসে তার বোন খুবই অসুস্থ। এর কিছুক্ষণ পর জানানো হয়, শরিফা আত্মহত্যা করেছেন।

ছামির মাহমুদ/এসজে/এমএস