বছরের পর বছর সংস্কার না করায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন সড়কটির অবস্থা বর্তমানে বেহাল। এতে করে হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সোনাইমুড়ী কলেজর সামনে থেকে সংযোগ সড়কটি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন সড়ক। সড়কটির সাত কি.মি. শেষে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের জন্মস্থান। তার নামেই গ্রামটি এখন রুহুল আমিন নগর। সে গ্রামেই রয়েছে স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। এছাড়া সংযোগ সড়ক ও তার আশপাশে রয়েছে অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১ কি.মি. এর মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল। যেটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তুু দীর্ঘ দিনে সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় এখন তা মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে সোনাইমুড়ী পৌরসভা, দেওটি ইউনিয়ন, আমিশাপাড়া ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী চাটখিল উপজেলার একটি অংশের চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রতিদিন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে নারী, শিশু, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীরা। সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললে তারা সড়কটির বেহাল দশা দেখিয়ে বলেন, সড়কটির বেহাল দশা দেখে অনেকে সময় স্বাধীনতা বিরোধী চক্ররা উপহাস করে নানা ধরনের মন্তব্য করতে দ্বিধাবোধ করে না। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. হানিফ বলেন, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে চটগ্রাম বিভাগের মধ্যে একজন হলো রুহুল আমিন। তার নামে সড়কটি তৈরি করা হলেও বছরের পর বছর ধরে এটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। গত ৬ মাস থেকে শোনা যাচ্ছে সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু কোনো কালো হাতের ইশারায় কাজটি শুরু হচ্ছে না?একই ইউনিয়ন দেওটির পিতাম্বরপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, এ সড়ক দিয়ে সুস্থ মানুষও চলাচল করার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেখেও না দেখার ভান করে চলে প্রশাসন। তিনি শহীদ রুহুল আমিনের নামে এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি করেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক তোতা মিয়া বলেন, এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো খুবই কষ্টকর। খানাখন্দক থাকায় প্রায়ই রাস্তার মধ্যে গাড়ি বিকল হয়ে যায়। বিভিন্ন পার্টস লাগানোর পর আবার নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বেশি ভাড়া চাইলে যাত্রীদের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয়। মো. হাসান নামে একজন যাত্রী বলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা ও পৌরসভার মধ্যে এ সড়কটির অবস্থান। প্রতিদিন প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও জাদঘুর দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থী এ পথে চলাচল করে। তাছাড়া কিছু দিন পর এ পথের পাশেই অন্ধ কল্যাণ সমিতির আই হসপিটালের কার্যক্রম শুরু হবে। সড়কটি সংস্কারের জন্য পৌর মেয়রকে বললে তিনি এটি তার আওতাধীন নয় বলে জানান। আবার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলেন, এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের।এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, ৭ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের জন্য ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার দর মূল্যে দুইবার দরপত্র আহ্বান করেও কোনো ঠিকাদার দরপত্র বা টেন্ডার ড্রপ করেনি। তৃতীয় বার দরপত্র বা টেন্ডার আহ্বান করা হলে ১৫% উর্ধ্ব রেট দিয়ে টেন্ডার জমা দেয়ায় পর তা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে চতুর্থবার আবার পুনঃ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে তা ড্রপ হলে সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছরের জানুয়ারিতে কাজটি শুরু করা যাবে।মিজানুর রহমান/এসএস/এমএস
Advertisement