মোস্তফা মহসীন
Advertisement
জীবন চেয়েছিলো জলের ধারাপাতে আলিঙ্গনের স্বাদ। একদিন তার স্বাদ মেটাতে বুঁদ হয়ে আমিও কি চাইনি সোঁদা গন্ধে ভেসে যাওয়ার রাজসিক অবগাহন? নাগরিক বিজ্ঞাপনের জনারণ্য ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়ে একটু টিপটিপ বৃষ্টিতে স্বস্তির সুবাতাস?
চলছিল উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি। অফিস থেকে আগাম বেরিয়ে কোনো এক বৃহস্পতিবার। আয়েসি ভঙ্গিতে সিগারেট টানা শেষ হতে না হতেই ; মনে হলো এই বিলোল জীবনের গতিপথে পরাজিত সময় চাইছে মুক্তি। ইচ্ছের স্বাধীনতায় যখন পালানোর মন্ত্র, মস্তিষ্কের মেমোরি কার্ড থেকে তখনই পাই সংকেত।
তাতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ছুটে যাবার নিমন্ত্রণ। সেমতে সামনে এসে দাঁড়ায় একটি ফোর স্ট্রোক সিএনজি। যানজটের ডালপালা ছেঁটে এগোতে এগোতে গাড়িটা ক্রমশ আমাকে চিনিয়ে দেয় পুরাতন ঢাকা আর তার বায়ান্ন হাজার তেপ্পান্ন গলি।
Advertisement
নদীমাতৃক দেশটিতে পুকুর থাকলে যেমন লাগে পুকুরঘাট,নদী থাকলেও লাগে নদীঘাট। জলই যেহেতু নিয়ন্ত্রণ করছে ঢাকার প্রবেশদ্বার তাই বুঝি নামকরণটা- ‘সদরঘাট’। এতোদিন নদী দখল আর তীরে গড়ে ওঠা কলকারখানা ও স্থাপনায় বুড়িগঙ্গার প্রাণ ছিল ওষ্ঠাগত; সেখানে আজ যেন সারি সারি কৃষ্ণচূড়া আর মাধবীলতা।
দৃষ্টিনন্দন হয়ে যেন চোখ কাবু করে দিচ্ছে অনন্য পাতা বাহারের সৌন্দর্য। এর মাঝে নদীঘাটের দিকে নানা রঙের নীড়ে ফেরা মানুষের ভীড়-বাট্টা। হকার-কুলি,পান- সিগারেট বিক্রেতাগণের মাঝে বাড়তি মুনাফার হাতছানি। মধ্যবয়সী এক সুশ্রী নারী বিক্রি করছেন সদরঘাটের শাহী পান।
মোলায়েম কণ্ঠের নিজস্বতায় জানালেন, পানবিলাসী যাত্রীদের জন্য একেকটা খিলিতে তিনি বহুপদের মসলা ব্যবহার করেন। পান মুখে দিলে মুখের ভেতরেই হরদম মিলিয়ে যাবে। চিবানোর সময় পিক ফেলবার প্রয়োজন পড়বেনা। যত চিবানো হবে ততই মোলায়েম আর বাড়তি স্বাদ আসবে।
একজন প্রবীণ লোক পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার মুহূর্তে বেশ জোরালো ধাক্কা দিলেন। বোঝা গেল জোরে হাঁটতে গিয়ে তার হাঁটু পায়ের সাথে যুতসই মতো সহযোগিতা করছিল না! সুন্দরবন, পারাবত, সুরভি, কীর্তনখোলা, অ্যাডভেঞ্চার, মানামি রোমাঞ্চ জাগানিয়া নামের মতোই জাহাজগুলোও সুন্দর আর দেখতে প্রশস্ত।
Advertisement
ঢাকা থেকে সড়ক আর জলপথ দু’ভাবেই কুয়াকাটা যাওয়া যায়। জলপথ নিরাপদ আর আনন্দদায়ক। জানা গেল ঢাকা থেকে প্রতিরাতে রাত ৮:৩০ মিনিটে ৩-৪ টা জাহাজ পটুয়াখালী, বরিশালের দিকে ছুটে যায়। ভাড়াও সাশ্রয়ী। রেলপ্রধান এলাকায় বড় হয়েছি, সড়কপথের সঙ্গেও আছে নিবিড় সম্বন্ধ। এরমধ্যে আবার উড়োজাহাজে চড়ে অনেকগুলো দেশে উড়ান দিয়েছি।
শৈশবে ভরা বর্ষায় উত্তেজনাসমেত নৌকায়ও বসেছি বটে, তবে এক্ষণে মনে হচ্ছে তা থেকে লঞ্চ বা জাহাজ চড়ার মুগ্ধতা একেবারেই ব্যতিক্রমধর্মী। আমি নিয়েছি সুরভি নামক জাহাজটির সিঙ্গেল কেবিন। ভেতরে রয়েছে নগদ অর্থমূল্যে খাওয়া-দাওয়ার ভরপুর সুব্যবস্থা। গ্রীষ্ম মৌসুম। জাহাজের ডেকে বসেছেন অনেকেই।
এখানেই পরিচয় হলো ঢাকার নারিন্দার যুবক ইকবাল হাসানের সঙ্গে। গিটার বাজিয়ে গানের সুর ধরলেন। তার আবার জনাকয়েক বন্ধু-বান্ধবী। এই দলের পাশেই ক্লান্তির ভারে যারা জাহাজের ডেকে ঝিমাচ্ছিলেন, দেখলাম গলা মেলানোর পাশাপাশি শরীরটাও নাড়িয়ে নিলেন ওদের কেউ কেউ।
একজন জানালেন, আইয়ুব বাচ্চুর ‘এই রুপোলী গিটার ছেড়ে একদিন... ’-গানটি মন্দ না! ক্লাসিক না হলেও সর্বজনীন আবেদন তো আছেই। অন্যপাশে তাকাই। গভীররাত অথচ মারবেলের মতো চোখ নিয়ে কতিপয় যুবক রীতিমতো আসন গেড়ে জেগে আছেন যোগব্যায়ামের ভঙ্গিতে ।
মনে হলো এরা সবাই কিছুক্ষণ আগেও ছিলেন পরস্পরের অপরিচিত; তাস পেটাতে পেটাতে হয়েছে বন্ধুত্ব। ওখান থেকে পান-সিগারেট শেয়ার হচ্ছে দিব্যি, পরে হয়তো টাকা-পয়সার লেনদেনেও গড়াতে পারে সম্পর্কগুলো। সিঁড়ির তলদেশে দেখা গেল শ্যামবর্ণ, মুখে ব্রণ জর্জরিত কিছু যুবতীর সঙ্গে, যারা কি-না আইশ্যাডো, লিপস্টিক, কাজল, মাশকারায় সুসজ্জিত হয়ে যুতসই খদ্দের খুঁজছেন।
মধ্যরাতপ্রেমী এই আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে, জীবন নাটকের পরতে পরতে কি বিচিত্র রোমাঞ্চ! পথ ভিন্ন হলেও এখানে ভিক্ষুক, বেশ্যা, হিজড়া, উকিল, ডাক্তার, প্রকৌশলী, কর্পোরেট ব্যবসায়ি...জীবিকার আগুনে দগ্ধ হতে হতে সবাই পাকা অভিনেতা। জীবিকার যুদ্ধে সবারই লক্ষ্য যুতসই খদ্দের। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সবাই চাইছেন প্রতিক্ষণ আপডেটেট থাকতে।
আঁধার চিরে সে মুহূর্তে সূর্যোদয়। ভোরের আকাশে এক স্নিগ্ধ কুসুম। বরিশালে পদার্পণ। লঞ্চ টার্মিনালে নেমে বুকধড়পড় করলো না বরং প্রশান্তির হিমেল বাতাসে শরীর হয়ে ওঠলো চাঙা। খুঁজে পেলাম ইজিবাইক চড়ে বিখ্যাত রেস্তোরাঁ ‘বলাকা’।
ইজিবাইক চালক মোস্তফা জানালেন, বিভাগীয় শহর হলেও বরিশালে বহুতল ভবন হাতেগোনা। এখনও প্রাতঃভ্রমণে বের হলে পুকুরগুলোতে শাপলা আর পদ্মফুলের সহাবস্থান দেখে নয়ন জুড়ান যায়। বাড়িগুলো দেখছিলাম আর মনে পড়ছিল বিখ্যাত কবি সৈয়দ আলী আহসানের ‘আমার পূর্ব বাংলা’কবিতাটি। প্রতিটি বাড়ির সামনেই সুপরিসর আঙ্গিনা।
যানজট নেই শুনশান নীরবতার শহর। রাস্তা থেকে চোখ ফিরিয়ে দেখতে পাই বাড়ির সামনের ন্যাড়া উঠোনটায় শিউলি গাছে বসে একটি দোয়েল আপন মনে শিস দিচ্ছে। চোখে পড়ছিল মোড়ে মোড়ে প্রচুর মিষ্টির দোকান। কিছু সংখ্যক লুচি সঙ্গে সবজি, ডাল ও পায়েসের আলাদা পদ। যাকে এই অঞ্চলে থালি বলা হয়। তবে নেপালী থালির মতো গুণগত মানে অতটা সুস্বাদু নয়।
যথারীতি রসনাবিলাস সাঙ্গ করে বাইরে দাঁড়িয়ে আগন্তুকের চোখ দিয়ে জীবনানন্দের প্রিয় শহরটাকে পরখ করে নিচ্ছি। মনে হলো, বহু সময় ধরে আমার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার পর প্রবীণ লোকটি আর নিজেকে সংবরণ করতে পারলেন না। মুচকি হেসে জানতে চাইলেন-
‘আমনে হা কইররা তাহায়ে কিহ দেহেন? আমনে কি এ হওরে নয়া? পথাম আইলেন? আমনের বাড়ি কহানে?অবশ্য এই অভিজ্ঞতা আমার নতুন নয়। আমার তাকানোর ভঙ্গিই লোকজনের সন্দেহ উস্কে দিতে যথেষ্ট। আমার হেতুবাদ শ্রবণের পরে অবশ্য তিনি বেশ লজ্জিত হলেন! অভিভাবকত্ব নিয়ে পটুয়াখালী যাওয়ার সহজ উপায়ও বাতলে দিলেন।
স্থানীয় লোকদের ভাষাভঙ্গিতে বিনোদনের পাশাপাশি যুগপৎ আন্তরিকতাও অনুভব করলাম। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে যেতে দুটো ফেরি অতিক্রম করলাম। রাস্তা অসাধারণ মসৃণ, ঝকঝকে। আতপ্ত দুই চোখ পুড়ছে। মধ্যাহ্ন শুরু হয়েছে কিছুক্ষণ আগেই। স্থানীয়দের মনে কৌতূহল মিশ্রিত আনন্দের তুফান।
টুরিজম কেন্দ্রিক শ্রমজীবীরা বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। আয় রোজগারের আশায়। শত শত নীরব মানুষে রাস্তা জনাকীর্ণ। লাগেজ বা বোঁচকা-বুঁচকির মতোই সোনামণিরা শহুরে স্মার্ট নারীদের কোলেকাঁখে সুযোগমতো চড়ে বসেছে। লাগেজ সংগ্রহের নিমিত্তে প্রচণ্ড তৎপরতা, পরিবারের পুরুষ সঙ্গীরা বিলাসবহুল এসিবাস থেকে লাফিয়ে নেমে পূর্বেই কর্তৃত্বের আজান দিয়ে রেখেছেন।
স্ব-ঘোষিত উন্মাদনা থেকে খানিকটা করে এগিয়ে এসে মেহমানদের স্বাগত জানিয়ে কুকুরগুলো আবার ফিরে যাচ্ছে প্রভুর আস্তানার দিকে। যাত্রী বোঝাই রিকশা, প্রাইভেট কার,মার্সিডিজ, নোহা,হাইয়েছ, তার সঙ্গে ঢাকা থেকে আগত সাকুরা পরিবহন...রাস্তায় মোড়ে নাটকীয় যানজট তৈরি করছে।
প্রকৃত বয়ানে এখনকার চিত্রকল্পটি পটুয়াখালীর কলাপাড়ার। যেটা কি-না দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে ওঠা সুবিখ্যাত বিচ নগরী। বলা হয় উপমহাদেশে এটাই একমাত্র বিচ যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই পরিপূর্ণতায় উপভোগ্য। পর্যটকদের জন্য সারা বছর ধরে অবিশ্রাম বিনোদন জোগানো, সাগরকন্যা কুয়াকাটার গ্রামের বাড়ির নাম কিন্তু লতাচাপলী।
বিকেল ৩টার পর থেকেই সমুদ্রের ধারের ভিড়টা গাঢ় হতে দেখা যায়। উৎসাহ সূর্যাস্ত দেখার। সূর্যাস্তে নত হবার। তখনও থামেনা সমুদ্র স্নানের হর্ষধ্বনি। হইচই। দিনভর তারই সঙ্গে ডিএসএলআর নিয়ে তাল মেলাচ্ছেন কুয়াকাটার ভাড়াটে শৌখিন ফটোগ্রাফাররা।
নীলজলের মধ্যে মডেল হবার যাবতীয় কসরৎ দেখিয়ে, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ প্রান্ত হতে ও প্রান্ত বাজিমাত করে ছবি তুলে দিচ্ছেন। আবার সন্ধ্যার পসরায়ও গাইড হিসাবে সঙ্গী হচ্ছেন। সেসবের ফাঁক গলে কখন যেন জলের কাছে প্রণত হয় সূর্যটা। সোনালী বালির সমুদ্র সৈকত কিছুক্ষণের জন্য গো-ধূলির আলোর ছোঁয়ায় হয়ে ওঠে কুসুমরঙা।
ঢেউ উন্মাতাল সেই নীলাভ সমুদ্র তখন বড়বেশি অচেনা। চাতক পাখির মতো ফ্রেম-প্রেমীরা দুপুর শেষের আগে থেকেই ক্যামেরা -ট্রাইপড নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। এখানকার ছবিওয়ালাদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে লাল কাঁকড়ারাও অন্যতম। সমুদ্রের পাড়ে এই কাঁকড়াদের লুকোচুরি-নৃত্য আর সেটা ধরতে অপেক্ষায় থাকা নতুন যুগের ক্যামেরার কবিদের যুযুধানে অনায়াসে গড়িয়ে যায় সময়।
১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নৈসর্গিক সৈকত ছাড়াও সীমা বৌদ্ধ মন্দির, রাখাইন পল্লী,ক্রাব আইল্যান্ড, গঙ্গামতির জঙ্গল, ফাতরার বন, কেরানিপাড়া, লেবুর চর,শুঁটকি পল্লী, বিখ্যাত সেই কুয়া, যার নামানুসারে আজকের কুয়াকাটা। চোখের সামনে ভাসছিল স্থাপত্যসমূহ। সন্ধ্যায় যখন সূর্যাস্ত নিবিড়, তখন চোখ ফেরানো দায়!
নীল জলে এতো কারুকাজ। এতো সুন্দর ঘোরলাগা প্রকৃতি! যেন মানুষের বিচিত্র আকাঙ্ক্ষার মাঝে লালিমা ছড়িয়েই শান্ত হচ্ছে না; সব প্রাণে অনুভূতির জোয়ার বাঁচিয়ে রেখে আত্মপ্রেমের অনুশীলনও তারঁ নিত্যদিনের ধর্ম!রাতে যখন সমুদ্রের পাড়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম; তখন অদূরে মাছ দ্বারা তৈরি মসলাযুক্ত খাবারের ঘ্রাণও নাকে এসে তীব্রভাবে হামলে পড়ছিল।
আর বালুরাশির উপর ছড়ানো পরিত্যক্ত সাদা ঝিনুকের উপর জোছনার আলোয় পা ফেলাটাও অন্যরকম এক দ্যোতনা। সে সুখ পিচঢালা নিয়ন আলোতে কখনোই পাওয়া যাবে না। সমুদ্র নিয়ে মৌসুমী ভৌমিকের একটি গান আছে, নাম ‘স্বপ্ন দেখব বলে’।
আধো-অন্ধকারে ঢাকা থেকে আগত উদ্দাম যুবকেরা খালি গলায় সেই লিরিকে ঝংকার তুলার চেষ্টা করছেন –‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে নীল জল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছ/আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে বহুদূর বহুদূর হেঁটে এসেছ।’
বিচে ছড়িয়ে ছিল সারি সারি কাঠের বিছানা আর ছাতা। ডাব বিক্রেতা লাল মিয়ার সঙ্গে ডাব খেতে গিয়ে সখ্য গড়ে ওঠলো। তিনি জানালেন, রাত্রিকালীন সমুদ্রের গর্জন ভীষণ ভয়ঙ্কর, মনে হয় যেন কেউ তেড়েফুঁড়ে আসছে!
যদিও এটা আসলে প্রকৃতিরই প্রকাশিত সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্যের মোহ বড় সর্বগ্রাসী। সেই মোহে পরে তিনি এই সৈকতেই কাটিয়ে দিলেন একটানা ২৮ বছর। এর পরে তিনি আমার সঙ্গে ভোরে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলার চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন।
হোটেল নীলাঞ্জনা থেকে খুব ভোরে কড়ানাড়ার শব্দে জেগে ওঠলাম। ছুটলাম ঝাউগাছের সারিতে মোড়ানো ঝাউগাছ তলায়। চরাচরের প্রার্থনা সঙ্গীত ভেঙ্গে সূর্যটা যখন উঠবে উঠবে বলে উঁকি দিচ্ছিল; তখন মনে হচ্ছিল এ যেন আগুনে ঝলসে যাওয়া ফুলন্ত এক বেলুন।
নিপুণ শিল্পকর্মে সোনায় মোড়া যার গোলাকার বৃত্ত। জ্বলন্ত জৌলুসের লাল। পৃথিবীর বুকে বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে মুছে দিতে চায় সমস্ত বিষাদ। অপার্থিব মুগ্ধতা উদযাপন মুহূর্তে আমি লাল মিয়ার দিকে তাকাই। দেখছি, তার তন্দ্রালু চোখে পরমাত্মা খুঁজে পাবার এক আনন্দধ্বনি। জীবনানন্দ মনে পড়ে যায়-
আমি থামিসেও থেমে যায় সকল লোকের মাঝে ব'সেআমার নিজের মুদ্রাদোষেআমি একা হতেছি আলাদা?আমার চোখেই শুধু ধাঁধা? আমার পথেই শুধু বাধা?
জেএমএস/জিকেএস