মতামত

বাইডেনের মুখে চীনের পরিবহন-অবকাঠামোর ‘প্রশংসা’ ও প্রসঙ্গকথা

চীনের বাইটডান্সের মোবাইল অ্যাপ ‘টিকটক’ থেকে এতোদিন দূরে ছিলাম। কী মনে করে মাস খানেক আগে আমার স্মার্টফোনে অ্যাপটি ইনস্টল করি। সেই থেকে অ্যাপটি প্রতিদিন গড়ে এক ঘন্টা সময় খেয়ে নিচ্ছে আমার। এখন বেশ বুঝতে পারছি, কেন এই অ্যাপটি বিশ্বজুড়ে এতো জনপ্রিয়। এখানে ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপের ছড়াছড়ি। কী নেই সেসব ক্লিপে! বিনোদন আছে, আছে শেখার মতো অনেককিছু। এইতো সেদিন শিখলাম, রেস্টুরেন্টে বিল ভাগাভাগি করার ইচ্ছা ওয়েটারের কাছে প্রকাশ করতে ‘Go Dutch’ টার্মটির ব্যবহার হল্যান্ডের মানুষ বেজায় অপছন্দ করে। চীনে ইংরেজির শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত এক ডাচ-কানাডিয়ান এই তথ্য জানালেন। তিনি বললেন: ‘এর পরিবর্তে বরং বলুন split the bill বা separate bills.’ আরেক ইংরেজির শিক্ষক তার টিকটক অ্যাকাউন্টে বললেন, ‘cats and dogs’ টার্মটি ইংরেজি ভাষায় থাকলেও, এর ব্যবহার নেই। ‘It’s raining cats and dogs’ বললে নাকি আমেরিকান ও ব্রিটিশ ইংরেজিভাষীরা হাসবেন! কেউ কেউ আবার বিভিন্ন ইংরেজি শব্দের ব্রিটিশ ও আমেরিকান উচ্চারণ নিয়ে হাজির হচ্ছেন টিকটকে। রান্নাবান্না, ছোট-খাটো টিপ্স, সার্কাস, যাদু, পণ্যের বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন খেলার উল্লেখযোগ্য ও আকর্ষণীয় অংশ, জীবনের খুঁটিনাটি—কী নেই টিকটকের জগতে!

Advertisement

টিকটকের জগতে আছে নিউজ-টিউজও। সেদিন একটি ছোট ভিডিও ক্লিপে দেখলাম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেনকে। একজন টিভি সাংবাদিক তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: ‘আনুমানিক ২০২৮ সালের মধ্যে চীনের জিডিপি মার্কিন জিডিপি-কে ছাড়িয়ে যাবে। এ সম্পর্কে আপনার ভাবনা কী?’ উত্তরে ব্লিঙ্কেন বললেন: ‘দেখুন, চীন বড় দেশ; দেশটির লোকসংখ্যাও অনেক।’ এটুকুই। ছোট্ট ক্লিপে আর কিছু নেই। যিনি এটা শেয়ার করেছেন, তার কাছে এটুকুকেই মনে হয়েছে চুম্বক অংশ। টিকটক যখন ব্যবহার করতাম না, তখনও চীনা সহকর্মী শিয়ে নান আকাশের কল্যাণে সংবাদধর্মী ভিডিও ক্লিপ দেখা হতো কখনও-সখনও। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। স্বাভাবিকভাবেই তখন টিকটকে ট্রাম্পকে নিয়ে আকসার ট্রল করতেন অনেক চীনা। একবার একটি ক্লিপে দেখলাম তিনি অনবরত চায়না, চায়না, চায়না...করছেন!

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক কারণে চীনকে টার্গেট করেছিলেন; চাপিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশটির ওপর বাণিজ্যযুদ্ধ। তাঁর কূটকৌশলের শিকার হয়েছিল চীনা কম্পানিগুলোও। টিকটকও তিনি নিষিদ্ধ করেছিলেন। বলা হয়, টিকটকের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা (মাত্র তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যায়) কাঁপন ধরিয়েছিল ফেসবুকের বুকে। ফেসবুকই নাকি কলকাঠি নেড়েছে টিকটককে নিষিদ্ধ করতে। মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে ট্রাম্পের সখ্যতার বিষয়টিও এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে। অবশ্য নিন্দুকেরা অন্য কথাও বলেন। টিকটকের মার্কিন প্লাটফর্মে ট্রাম্প-বিরোধী প্রচারণা নাকি তুঙ্গে উঠেছিল। তারা একটি দৃষ্টান্তও উল্লেখ করেন এ ক্ষেত্রে। ২০২০ সালের ১৬ জুন টিকটকের একজন ব্যবহারকারী ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের নির্বাচনী সভায় যোগ না-দেওয়ার আহ্বানসম্বলিত একটি বার্তা প্রচার করে। তার দেখাদেখি আরও একাধিক অনুরূপ বার্তা টিকটকে প্রচারিত হয়। যথারীতি সেগুলো ভাইরালও হয়। পরে দেখা যায় যে, ট্রাম্পের জনসভাস্থলের আসনের ৬৬ শতাংশই খালি! ট্রাম্প এতে ক্ষুব্ধ হন। ঘটনার ঠিক এক মাস পড়েই তিনি প্রথম টিকটকের বিরুদ্ধে কথা বলেন। অনেকে মনে করেন, ওকলাহোমার জনসভায় কম লোক হওয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের টিকটকবিরোধী মনোভাবের যোগসূত্র রয়েছে।

এখন ট্রাম্প নেই। নেই মানে ক্ষমতায় নেই। যুক্তরাষ্ট্রে এখন জো বাইডেনের সরকার। অনেকেই মনে করেন, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় চীন-মার্কিন সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বাইডেন প্রশাসনও চীনের ওপর চাপ বজায় রাখার ট্রাম্পীয় নীতি থেকে খুব একটা সরে আসেনি। ফলে চীনের মানুষের কাছে জো বাইডেনও খুব প্রিয় একটি নাম নয়। সুযোগ পেলেই টিকটকের চীনা প্লাটফর্মে তাকে নিয়েও ট্রল চলে। বিমানের সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় জো বাইডেনের তিন তিনবার পা পিছলে পড়ে যাওয়ার দৃশ্যটা আমি কিন্তু টিকটকের কল্যাণেই দেখেছি! আবার সেদিন দেখলাম একটি ভিডিও ক্লিপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের পরিবহন-অবকাঠামো খাতের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফিরিস্তি দিচ্ছেন। একেবারে তথ্য-উপাত্তসহ! না, তাঁর উদ্দেশ্য চীনের বা চীনের সরকারের প্রশংসা করা নয় মোটেই। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন-অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ট্রিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগুচ্ছেন। তার এই পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়েই তিনি পরিবহন-অবকাঠামো খাতে চীনের বিপুল অর্জন ও এ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের দারুণভাবে পিছিয়ে থাকার কথা বলেছেন।

Advertisement

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন চীনের পরিবহন-অবকাঠামো খাতের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু এই উন্নয়নের জন্য চীনাদের কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা, আন্তরিকতা, ত্যাগস্বীকার, ও লেগে থাকার মানসিকতার প্রশংসা তিনি করেননি। অন্তত ছোট্ট ভিডিও ক্লিপে তা নেই। আর আমি নিশ্চিত যে, এ জন্য তিনি সিপিসি বা চীনা সরকারকে কোনো ক্রেডিট দেননি। তিনি ক্রেডিট না দিলেও, প্রশংসা না-করলেও, বাস্তবতা হচ্ছে, আজকের চীন রাতারাতি বর্তমান অবস্থায় পৌঁছায়নি; দেশটির উন্নত পরিবহনব্যবস্থাও এক বা দু’বছরে গড়ে ওঠেনি। এর জন্য চীনা সরকারের নেতৃত্বে চীনা জনগণকে বিগত কয়েক দশক নিরলস পরিশ্রম করতে হয়েছে।

খুব বেশিকাল আগের কথা নয়, যখন চীনের পরিবহনব্যবস্থা ছিল খুবই অনুন্নত, নাজুক। স্রেফ যাতায়াতব্যবস্থা ভালো না-থাকায় দেশের বহু অঞ্চল ছিল হতদরিদ্র। দেশের অধিকাংশ মানুষ তখন নিজ নিজ অঞ্চলে বলতে গেলে বন্দি জীবন যাপন করতেন। বাইরের দুনিয়া দেখার কোনো সুযোগ তাদের সামনে ছিল না। এমনকি, বড় বড় শহরগুলোর মধ্যে যাতায়াত করাও ছিল কঠিন ও ব্যয়বহুল ব্যাপার। চার দশক আগে সি’আন থেকে শাংহাই যেতে ট্রেনের একটি শক্ত আসনের টিকিটের দাম ছিল প্রায় ৩০ ইউয়ান, যা তখনকার একজন শহুরে শ্রমিকের মাসিক গড় বেতনের প্রায় সমান। অর্থাৎ তখন টাকাও অনেক বড় ব্যাপার ছিল। খুব কম মানুষই দূরের যাত্রার ব্যয় বহরের ক্ষমতা রাখতেন। আবার টাকা থাকলেই সব সহজ ছিল—এমনও নয়। সি’আন ও শাংহাইয়ের মতো বড় শহরগুলোর মধ্যে দিনে এক বা দুটি শ্লথগতির ট্রেন যাতায়াত করতো। তাই টিকিট পাওয়া ছিল খুবই কঠিন ব্যাপার। টিকিট কাউন্টারে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে তারপর টিকিট কাটতে হতো। কখনও কখনও দেখা যেতো টিকিট শেষ! যারা ভাগ্যবান, তারা টিকিট পেতেন। আর টিকিট পাওয়ার পর শুরু হতো ট্রেনে যন্ত্রণাদায়ক ভ্রমণ। এক শ আসনের একটি বগিতে দুই শতাধিক যাত্রীর গাদাগাদি করে ভ্রমণ আরামদায়ক হতে পারে না! সি’আন থেকে শাংহাইয়ের দূরত্ব প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার। এটুকু দূরত্ব অতিক্রম করতে ট্রেন সময় নিতো ২৪ ঘন্টার বেশি!

রেলপথের যখন এই হাল, তখন বিমানপথের কথা বলাই বাহুল্য। ৪০ বছর আগে চীনে বিমানে চড়া ছিল স্বপ্নের মতো ব্যাপার। বিমানের টিকিটের জন্য গুণতে হতো ট্রেনের টিকিটের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি অর্থ। কিন্তু অর্থ থাকলেই যে-কেউ বিমানে চড়তে পারতো না। কেবলমাত্র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিমানের টিকিট কিনতে পারতেন। তাদেরও সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নিতে হতো, রীতিমতো লিখিত পূর্বানুমতি। এক্ষেত্রে কারণটা সহজেই অনুমেয়। তখন চীনের বিমান-যোগাযোগব্যবস্থা ছিল অনুন্নত, বিমান ও বিমানের রুটের সংখ্যা ছিল হাতে-গোনা। তখন চীনে বাংলাদেশের তেজগাঁও বিমানবন্দরের মতো একটি বিমানবন্দরও ছিল না! আমার সাবেক চীনা সহকর্মী চিয়াং ভাই তেজগাঁও বিমানবন্দর দেখে মনে মনে ভেবেছিলেন: আহা! আমাদের যদি এমন সুন্দর একটি বিমানবন্দর থাকতো!

বিমানপথ ও রেলপথের মতো একই হাল ছিল সড়কপথ ও নৌপথের। সর্বত্রই দুরবস্থার চিহ্ন। এমনই এক পরিস্থিতিতে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন শীর্ষনেতা তেং সিয়াও পিংয়ের নেতৃত্বে চীনে শুরু হয় সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ কার্যক্রম। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুরু হয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার সংস্কার এবং চীনকে বহির্বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়া। আর ওই কার্যক্রমের শুরুতেই চীনের সরকার এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে অনুন্নত পরিবহন-অবকাঠামো; টেকসই উন্নয়নের অন্যতম মৌলিক পূর্বশর্ত হচ্ছে পরিবহন খাতের উন্নয়ন। সেই থেকে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারের কাছে অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে পরিবহন খাত। তখন থেকেই বিদেশি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের চীনের পরিবহন-অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া শুরু হয়; প্রযুক্তি কম্পানিগুলোকে আহ্বান জানানো হয় এ খাতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করতে। আজকে চীনের যে পরিবহন-অবকাঠামোর কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট উদাহরণ হিসেবে টানছেন, সে অবকাঠামো গড়ে উঠেছে বিগত চার দশক ধরে, তিলে তিলে।

Advertisement

এখন চীনে আছে ১৪৬,০০০ কিলোমিটার রেলপথ। দুই লাখের বেশি জনসংখ্যা আছে—চীনের এমন ৯৯ শতাংশ শহর রেল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। অন্যভাবে বললে, বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম রেলপথ এখন চীনে অবস্থিত। এর মধ্যে আবার দ্রুতগতির রেলপথ আছে ৩৮,০০০ কিলোমিটারের বেশি। এক্ষেত্রে চীন বিশ্বের সকল দেশ থেকে বহুদূর এগিয়ে আছে। বিশ্বে বর্তমানে যতটুকু দ্রুতগতির রেলপথ আছে, তার ৭০ শতাংশই চীনে অবস্থিত। ১০ লাখের বেশি মানুষ আছে—চীনের এমন শহরগুলোর ৯৫ শতাংশই বর্তমানে দ্রুতগতির রেলপথের আওতায় এসেছে, যা একটি বিশ্বরেকর্ড। চীনে বর্তমানে যত মানুষ ট্রেনে চড়েন, তাদের ৭০ শতাংশই দ্রুতগতির ট্রেন ব্যবহার করেন। এখন আর ট্রেনের টিকিটের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। অনলাইনে মুহূর্তের মধ্যে টিকিট বুকিং দেওয়া যায়। শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে টিকিট কাউন্টার। ঘন্টায় ৩০০ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার বেগে চলা ট্রেনগুলো যাত্রীদের অনেক সময় সাশ্রয় করছে। এখন আর সি’আন থেকে শাংহাই যেতে ২৪ ঘন্টা লাগে না, লাগে ৫ ঘন্টাও কম সময়। এখন চীনে বিমানে চড়া ডালভাতের মতো। কখনও কখনও বিমানের টিকিট পাওয়া যায় ট্রেনের টিকিটের চেয়েও সস্তায়। গোটা চীনজুড়ে বেসামরিক বিমানবন্দরের সংখ্যা ২৪০ ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। দেশের ৯২ শতাংশ শহর বিমান নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। এখন চীনের ২৩০টির বেশি শহর পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত আছে সাড়ে চার সহস্রাধিক বিমানরুটের মাধ্যমে। আর বিশ্বের ৬৫টি দেশের ১৬৫টির বেশি শহরের সঙ্গে চীন সংযুক্ত আছে সাড়ে ৯০০ আন্তর্জাতিক রুটের মাধ্যমে। পিছিয়ে নেই সড়কপথ ও নৌপথও। চীনের সড়কপথের দৈর্ঘ্য ৫১ লাখ কিলোমিটার ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। এর মধ্যে হাইওয়ের দৈর্ঘ্য ১৫৫,০০০ কিলোমিটার, যা বিশ্বের দীর্ঘতম। চীনের গ্রামাঞ্চলে নতুন নির্মিত বা মেরামতকৃত রাস্তার দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ কিলোমিটারে। দেশটিতে বর্তমানে আছে ১৬,১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উচ্চমানের অভ্যন্তরীণ নৌপথ।

২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে চীন পরিবহন খাতে স্থায়ী সম্পদ হিসেবে বিনিয়োগ করেছে প্রায় ১৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (২.৩৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এখন চলছে চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকাল। পরিকল্পনা অনুসারে, আগামী পাঁচ বছরেও চীনে পরিবহন-অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের চলমান ধারা অব্যাহত থাকবে। এ কথা অনস্বীকার্য যে, চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে পরিবহন খাতের ভূমিকা অনেক বেশি। আবার উল্টোভাবে বললে, চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন দেশটির পরিবহন খাতের উন্নয়নে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আগামী পাঁচ বছরও এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং চীন বিশ্বকে আরও সারপ্রাইজ উপহার দেবে—এমনটা আশা করাই যায়।

লেখক: বার্তা সম্পাদক, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)alimulh@yahoo.com

এইচআর/জিকেএস