দেশজুড়ে

কুমিল্লায় বেড়েছে ভিক্ষুক

মহামারি করোনার প্রভাবে আয় শূন্য হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। কাজ না পেয়ে পথে পথে ভিক্ষা করছেন হতদরিদ্ররা। তারা এখন গ্রাম থেকে শহরমুখী হচ্ছেন ভিক্ষাবৃত্তিতে। কুমিল্লা নগরীতে তুলনামূলক ভিক্ষুক বেড়েছে। পথে পথে থালা নিয়ে বসেছেন ভিক্ষার আশায়।

Advertisement

জানা গেছ, বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে এখন ভিক্ষা করছেন। আগে যেসব নারী গৃহশ্রমিকের কাজ করতেন, তারাও এখন কাজ হারিয়ে ভিক্ষা করছেন।

শনিবার (৮ মে) কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, রাজগঞ্জ, শাসনগাছা, টমছম ব্রিজ ও পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলকায় অন্তত দেড় শতাধিক ভিক্ষুক দেখা গেছে। এদের মধ্যে মধ্যবয়সী নারীর পোশাক আশাক দেখেও কিছুটা আঁচ করা যায় যে তারা এর আগে রাস্তায় নামেননি, তারা পেশাদারও ভিক্ষুক নন। শ্রমজীবী এসব নারী বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গেই সম্পৃক্ত ছিলেন। অনেকটা সামাজিক মর্যাদা নিয়েই তারা জীবন-যাপন করতেন। কিন্তু সময়ের ফেরে এখন তাদের পথে নামতে হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জাগো নিউজকে জানান, করোনার আগে অন্তত ১৫ বছর মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করেছি। এমন পরিস্থতিতে কখনো পড়তে হয়নি। করোনার পর থেকে মানুষ কাজ দেয় না। তিন বাচ্চা নিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে এ পথে এসেছি।

Advertisement

ছদ্ম নাম কামাল হোসেন। ছিলেন পরিবহন শ্রমিক। এক দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হয়। স্বামী-স্ত্রীসহ চার জনের সংসার চালাতে টানাটানি। তাই ঈদ উপলক্ষে কুমিল্লায় এসেছেন ভিক্ষা করতে।

কুমিল্লার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক এহতেশাম হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভিক্ষাবৃত্তি অনেক কমেছে। করোনার প্রভাবে ভিক্ষুকের সংখ্যা আবার বেড়েছে।

কুমিল্লা চলচ্চিত্র মঞ্চের পরিচালক ও সাংস্কৃতিককর্মী খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, করোনার প্রথম ধাপে যেভাবে বিত্তবানদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষরাও নিম্ন আয়ের মানুষদের সহযোগিতা করেছে এখন সেটা দেখা যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাদের আয়ও কমে গেছে। অর্থনীতিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে। এক শ্রেণির মানুষের কাছে টাকার পাহাড়, আর এক শ্রেণির হাত শূন্য। তাই মানুষ পথে বসেছে।

কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে উপপরিচালক জেড এম মিজানুর রহমান খান জাগো নিউজকে বলেন, করোনার কারণে কুমিল্লায় ভিক্ষুকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালের জরিপ অনুসারে কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ভিক্ষুক রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা সিটিতে ৩ শতাধিক। রমজানের কারণে এরা শহরমুখী হয়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

এএইচ/জিকেএস