করোনার কারণে রফতানি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও থেমে নেই। তবে করোনার পর বাংলাদেশ আবারও রফতানি ধারায় ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
Advertisement
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর মাঝেও রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো চলছে, আমাদের রফতানি থেমে নেই। কোভিড-১৯ পরবর্তী বাংলাদেশ আবারও রফতানি বৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসবে।
শনিবার (৮ মে) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আইসিএবি আয়োজিত ‘ডাইভারসিফিকেশন অব বাংলাদেশ এক্সপোর্ট বাসকেট: অপারচুনিটিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের রফতানি পণ্যের সংখ্যা ও বাজার সম্প্রসারণের বিকল্প নেই। শুধু তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। তাই দেশের সম্ভাবনাময় ১৯টি রফতানি পণ্যকে টার্গেট করে সরকার কাজ করছে। রফতানি পণ্যকে অধিক গুরুত্ব দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর একটি সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্যকে ‘প্রোডাক্ট অফ দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ইসিফোরজে নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে লেদার গুডস, প্লাস্টিক, ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং- এ চারটি রফতানি পণ্যের সেক্টরকে যোগ্য করে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে।
Advertisement
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে ভূমি বরাদ্দ পাওয়া গেছে, নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এখানে দেশের শিক্ষিত যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ প্রদান, হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান, ডিজাইনে বৈচিত্র আনা এবং পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে কাজ করা হবে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একটি পণ্যের কাঁচামাল থেকে শুরু করে প্যাকেটিং পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রয়োজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বাংলাদেশকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য সরকার কাজ করছে। বাণিজ্য সুবিধা আদায়ের জন্য পিটিএ বা এফটিএ’র মতো বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করা হয়েছে। আরও বেশ কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য আলোচনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকনোমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, কয়েকটির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখানে দেশি-বিদেশি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়েছে।
আইসিএবির সাবেক প্রেসিডেন্ট আজিজ এইচ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শুভাশীষ বসু। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, বিসিক চেয়ারম্যান মোস্তাক হোসেন, বিজিএমই প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও শিপ বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম।
Advertisement
এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ হ্যান্ডিক্রাপ্ট ম্যান্যুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গোলাম আহসান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফ্টওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর, বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মারুফ হোসেন, বাংলাদেশ এগ্রো প্রোসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঈদ মো. সোহরাব হাসান এবং আইসিএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মাহমুদুল হাসান খসরু।
আইএইচআর/এআরএ/এমকেএইচ