চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মো. কবিরুল ইসলাম কবির (৬৯) দুধ বিক্রি করে মাসে আয় করেন ৩০-৪০ হাজার টাকা। উপজেলার মানুষ ‘কবির ঘোষ’ নামেই তাকে সবাই চেনে। তিনি উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বহালাবাড়ী বাবা মাজেদ আলীর ছেলে।
Advertisement
বাবা মাজেদও ছিলেন দুধ ব্যবসায়ী। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে পড়ালেখা বাদ দিয়ে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই কবিরুলকে নিতে হয় সংসারের দায়িত্ব। সেই থেকে তিনি দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
কবির ঘোষ এখন ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি বাড়ি দিয়ে দুধ সংগ্রহ করে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন বাড়িতে সরবরাহ করছেন। তার পাঁচ সদস্যের পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও তিন ছেলে রয়েছে। বড়ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী, ছোটছেলে প্রবাসী আর মেজছেলে বাবার পেশাতেই রয়েছেন।
কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার পড়ালেখার খরচ চালানোর মতো পরিবারের সামর্থ্য ছিল না। যে কারণেই বেছে নিতে হয় উপার্জনের পথ। তখন থেকেই দুধের ব্যবসা করছি। আয় রোজগার কম হলেও বদলাইনি কর্মজীবনের শুরুর এই গোয়াল পেশা।’
Advertisement
এই ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থে ২০১৩ সালে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে হজ পালন করেছেন কবিরুল।
দীর্ঘদিন বাইসাইকেল চেপে দুধ সরবরাহ করলেও বর্তমানে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে তিনিও বদলে ফেলেন তার চলাচলের বাহন। ২০ হাজার টাকা দিয়ে কেনেন ইজিবাইকের ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল। প্রতিদিন তিন থেকে চার মণ দুধ সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।
শিবগঞ্জ বাজারের দোকানি রিকো জানান, ১০ বছর ধরে কবিরুলের কাছ থেকে দুধ নিয়ে তিনি মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করেন। বর্তমানে রমজান মাস চলায় বেচাকেনা কমে গেছে। তবে কবিরুলের দুধে কোনো দিন ভেজাল ধরা পড়েনি। তার দুধের তৈরি খাবার দীর্ঘসময় রাখা যায়। সৎভাবেই দুধের ব্যবসা করে সংসারের খরচ চালান তিনি।
কবিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, যতদিন সুস্থ থাকবেন ততদিন এই ব্যবসা চালিয়ে যাবেন।
Advertisement
এসআর/জেআইএম