প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ভারতে। ধারণা করা হয়েছিল ভারতীয়দের মধ্যে ধীরে ধীরে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই দিন এখনও অনেক দূরে। আগামী কয়েক মাসের মধ্য়েও ভারতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
Advertisement
ভারতে সর্বশেষ সেরো সার্ভের রিপোর্ট অনুসারে দেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ২১ শতাংশেরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৮ হাজার ৫৮৯ জন প্রাপ্ত বয়স্কের মধ্যে ২১ দশমিক ৪ শতাংশের শরীরে বাসা বেঁধেছে করোনাভাইরাস।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের মতে, বেশিরভাগ ভারতীয়র এখনও কোভিড-১৯ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে মানুষ এখন প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন থেকে অনেক দূরে রয়েছে।
পাব্লিক হেল্প ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার এপিডেমিওলজিস্টের অধ্যাপক গিরিধর বাবু বলেছেন, হার্ড ইমিউনিটি এখনও পর্যন্ত একটি অধরা ধারণা। বেশিরভাগ দেশে করোনার একাধিক তরঙ্গ দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও তো থার্ড, এমনকি ফোর্থ ওয়েবও দেখা গেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে এরপর যখনই করোনার ঢেউ আছড়ে পড়বে তখন যেন যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ওয়ার্কফোর্স আমাদের কাছে থাকে। টিকা এখন একমাত্র অস্ত্র। আমাদের এমনটা ভাবা কখনই উচিত নয় যে সংক্রমণের পর আমাদের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে।
মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আরও উঁচুতে উঠেছে ভারতে। বুধবারও আক্রান্ত-মৃত্যুর নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশটি। এদিন সেখানে নতুন করে ৪ লাখ ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, যা এর আগের সর্বোচ্চ রেকর্ডের চেয়ে অন্তত ১০ হাজার বেশি। এছাড়া মারা গেছেন প্রায় চার হাজার রোগী।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর অনুসারে, বুধবার ভারতে নতুন করে ৪ লাখ ১২ হাজার ৭৮৪ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, যা গোটা বিশ্বের মধ্যে কোনো দেশে একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটিও অবশ্য ভারতেরই ছিল। গত ৩০ এপ্রিল বিশ্বে প্রথমবারের মতো একদিনে চার লক্ষাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছিল সেখানে।
আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, ভারতে গত কয়েকদিন ধারাবাহিকভাবে করোনা টেস্টের সংখ্যা কমা সত্ত্বেও বুধবার সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে গত ৩০ এপ্রিল রেকর্ড রোগী শনাক্তের দিন সর্বোচ্চ ১৯ লাখ ৪০ হাজার নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। কিন্তু গত সোমবার এর পরিমাণ প্রায় তিন লাখ কমে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ৬০ হাজারে। আর গত মঙ্গলবার তা কমে হয়েছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার।
Advertisement
টিটিএন/জিকেএস