আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণের জন্য গাছ কাটা বন্ধ করতে সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৬ মে) মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্ত বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শামিম আখতার এবং চিফ আর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানকে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
Advertisement
নোটিশে বলা হয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ উদ্যানে সংরক্ষণে কয়েকদফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
রায়ে বলা হয়, রমনা তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা নিছক একটি এলাকা নয়। এই এলাকাটি ঢাকা শহর পত্তনের সময় থেকেই এ পর্যন্ত একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে এবং এর একটি ঐতিহাসিক ও পরিবেশগত ঐতিহ্য আছে। শুধু তাই নয়, আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্র এই এলাকা। এই পরিপ্রেক্ষিতেও সম্পূর্ণ এলাকাটি একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে সংরক্ষণের দাবি রাখে। এখানে এমন কোনো স্থাপনা থাকা উচিত নয় যা এই এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিন্দুমাত্র ম্লান করতে পারে। পরিবেশগত দিক হতে তা আরও বিধেয় নয়। কারণ রমনার উদ্যান বা রমনা রেসকোর্স ময়দান ঢাকা শহরের দেহে ফুসফুসের ন্যায় অবস্থান করছে। কোনোভাবেই এটাকে রোগাক্রান্ত করা যায় না।
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু স্মরণকাল থেকেই এটি উদ্যান হিসেবে পরিচিত, সেহেতু ২০০০ সালের ৩৬ নং আইন অনুসারে সোহরাওয়ার্দী ‘উদ্যান’ সংজ্ঞার আওতাধীন এবং এই জায়গার শ্রেণী সাধারণভাবে অপরিবর্তনীয়। এটিকে অনাবশ্যক স্থাপনা দ্বারা ভারাক্রান্ত করা অবৈধ হবে।
আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেস্টুরেন্ট /দোকান নির্মাণের জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলেও নোটিশে তুলে ধরা হয়েছে।
Advertisement
এফএইচ/ইএ/জেআইএম