করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ায় সেশনজটসহ বড় ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষতি কিছুটা লাঘব করতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা অনলাইনেই নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি রূপরেখা তৈরি করেছে।
Advertisement
আজ (বৃহস্পতিবার) দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এ বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা অনলাইনে নিতে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে একটি রূপরেখা বা নির্দেশনা তৈরি করেছে।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, তারা অনলাইনভিত্তিক সৃজনশীল অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস টেস্ট, এমসিকিউ বা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নে পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভার মাধ্যমে মূল্যায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে রূপরেখাটি তৈরি করেছেন। এক্ষেত্রে ভাইভার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। কমিটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার কথাও তুলে ধরেছে। যদিও বাংলাদেশে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
Advertisement
জানা গেছে, কমিটির চিন্তা হলো শিক্ষার্থীরা যেখানে আছেন, সেখান থেকেই খাতায় উত্তর লিখে সেটির ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাবেন। এক্ষেত্রে তারা কিছু ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন। কোনো কারণে যদি কোনো শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন, তাহলে তাকে যেন পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়, সেই বিষয়টিও রয়েছে সুপারিশে।
জানতে চাইলে কমিটির প্রধান ও ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কিভাবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে আমরা একটি রূপরেখা তৈরি করেছি। সেটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। বুধবার (৫ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দেশে বর্তমানে ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সেশনজটে পড়ে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনেও পিছিয়ে পড়ছেন। এর আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছিল ইউজিসি। যদিও সেটিও বন্ধ রাখা হয়েছে।
Advertisement
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৩ মে স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় ঘোষিত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি-না, তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এমএইচএম/এমএইচআর/এমকেএইচ