মিশর নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। বিশেষ করে মিশরের পিরামিড ও মমি নিয়ে যুগ যুগ ধরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে আসছেন।
Advertisement
আজও মিশরের প্রতিটি প্রাচীন স্তম্ভসহ প্রাকৃতিক সাইটগুলোতে অজানা রহস্য বিদ্যমান। প্রত্নত্বত্ত্ববিদরা আজও নিরন্তন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মাটি খুঁড়ে প্রাচীন মিশরের রহস্য খুঁজে বের করার।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা পোল্যান্ডের ওয়ারসও-তে রাখা একটি ২০০০ বছরের পুরনো মিশরীয় মমির পরীক্ষা করেন। বিজ্ঞানীরা এই মমি দেখে তাজ্জব বনে যান। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে মমিটি ছিল কোনো পুরুষের।
তবে পরীক্ষার পর জানা যায় অদ্ভুত এক তথ্য। মমিটি আসলে একজন নারীর। তিনি গর্ভবতী ছিলেন। এই মমির বয়স কমপক্ষে ২০০০ বছর। এতা বছর পরেও গর্ভের শিশুর চিহ্ন খুঁজে পান ওই মমির শরীরে।
Advertisement
জানা যায়, ১৮২৬ সালে নীল নদের তীরবর্তী থিবেস শহরে আবিষ্কার করা হয় এই পুরুষবেশী মমিটিকে। সবাই ভেবেছিলেন এটি বোধ হয় কোনো পুরুষ যাজকের মমি! মৃত্যুকালে ওই মমির নারীর বয়স ছিল ২০-৩০। নারীর মমিটি এতো বছরেও নষ্ট হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মমির সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রে করে, মমির পেটে ২৬-৩০ সপ্তাহ বয়সী একটি ভ্রূণের দেহাবশেষ খুঁজে পায়। প্রত্নতাত্ত্বিক মারজেনা ওজারেক-সিজিলেকে বলেন , আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এই মমিটি বোধ হয় পুরুষের।
তবে বিভিন্ন পরীক্ষা পর আমরা দেখতে পেলাম মমির স্তন এবং লম্বা চুল আছে। তারপরে আমরা জানলাম, এটি এক গর্ভবতী নারীর মমি। তার গর্ভে আমরা ছোট হাত-পা (ভ্রূণের) দেখে আমরা হতবাক হয়ে যায়, বলেন মারজেনা।
গবেষণার ফলাফল জার্নাল অব আর্কিওলজিকেল সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এটিই সম্ভবত বিশ্বের প্রথম গর্ভবতী মমি। পোলিশ বিজ্ঞানীরা, চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল ওয়ার্সার জাতীয় জাদুঘরে রাখা ২০০০ বছর বয়সী এই মমির পরীক্ষা করেন।
Advertisement
গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ড. ওয়াজিয়াচ ইজসমন্ড। তিনি বলেন, এই মমিটি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এটি প্রথম গর্ভবতী নারীর মমি! ১৮২৬ সালে উদ্ধারকৃত এই মমিটি ১৯১৭ সালে পোল্যান্ডের ওয়ারসওতে আনা হয় এবং কফিনের শিলালিপিতে একজন পুরুষ পুরোহিতের নামকরণ করা হয়েছিল।
মমিটি একটি কাপড়ের মধ্যে জড়িত ছিল। বেশ কয়েকটি তাবিজ বাঁধা ছিল মমতে। যা প্রাচীন মিশরীয় রাজত্বের দেবতা এবং আকাশের চার পুত্র হোরাসকে উপস্থাপন করে।
সূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট
জেএমএস/জিকেএস