ভারত যেভাবে করোনাভাইরাস সঙ্কট মোকাবিলা করছে তা নিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত সামাজিক মাধ্যমের একটি অ্যাকাউন্টের পোস্টে বিদ্রূপ করার পর এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে একটি পোস্টে পাশাপাশি দুটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। একটিতে দেখা যাচ্ছে, চীনে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। আর পাশের ছবিতে দেখা গেছে ভারতে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মানুষের মরদেহ চিতায় দাহ করা হচ্ছে।
এই ছবির নীচে লেখা ছিল, চীনে জ্বালানো আগুন বনাম ভারতে জ্বালানো আগুন। শনিবার বিকেলে এই পোস্টটি দেয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়। কেন এ ধরনের পোস্ট করা হলো বা এই পোস্টের উদ্দেশ্য কী তা এখনও পরিষ্কার নয়।
বলা হচ্ছে এই পোস্টটি দেয়া হয়েছিল এমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে, যেটি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত। পার্টির সেন্ট্রাল পলিটিক্যাল এন্ড লিগ্যাল এফেয়ার্স কমিশনের অ্যাকাউন্ট এটি। ওয়েইবোতে এই অ্যাকাউন্ট ফলো করে লাখ লাখ মানুষ। ওয়েইবো চীনের খুবই জনপ্রিয় একটি মাইক্রোব্লগিং সাইট।
Advertisement
তবে এই পোস্টটি নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পোস্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে অনেকে এটিকে অসঙ্গত বলে মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, চীনের বরং উচিৎ ভারতের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা।
চীনা পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু শিজিন লিখেছেন, এসময় মানবতাবাদের ব্যানারটিই উঁচুতে তুলে ধরুন, ভারতের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করুন এবং চীনা সমাজকে সুদৃঢ়ভাবে উচ্চতর নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করান।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কোভিড-১৯ সঙ্কট নিয়ে শোকবার্তা পাঠালেন, তার একদিন পর ওয়েইবোতে এই পোস্টটি প্রকাশ হয়। শি শোকবার্তায় বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে এবং যে কোন অতিরিক্ত সাহায্য দিতে চীন প্রস্তুত।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে ভারত এখন হিমসিম খাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা এবং অক্সিজেনের তীব্র সঙ্কট চলছে, তার মধ্যেই সেখানে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ওষুধ ও শয্যা সঙ্কটও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
Advertisement
দেশটিতে গত শনিবার দৈনিক সংক্রমণ ৪ লাখ ছাড়িয়েছিল। রোববার এবং সোমবার তা কিছুটা কমেছে। অবশ্য শনিবারের তুলনায় গত দু’দিন করোনা পরীক্ষাও হয়েছে কম। সোমবার (৩ মে) দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ জন।
সংক্রমণের মতো গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যুও কিছুটা কমেছে। যদিও তা সাড়ে ৩ হাজারের কাছেই রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৪১৭ জনের। এ নিয়ে ভারতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৯ জনে।
টিটিএন/এমএস