ভ্রমণ

নীল রঙের এক শহর, জেনে নিন রহস্য

বেশ কয়েকটি সিনেমার দৃশ্যে এই শহরটি হয়তো আপনি দেখেছেন! তবে তা সিনেমার সেট ভেবে ভুল করাটা স্বভাবিক! বাস্তবেই এমন এক শহর আছে, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।

Advertisement

মরোক্কোর উত্তর-পশ্চিমের একটি শহর হলো শেফচাউইন। আর এ শহরটি একেবারেই রূপকথার রাজ্যের মতো। মনেই হবে না আপনি পৃথিবীর কোনো স্থান দেখছেন! সত্যিই কল্পনার এক স্বর্গরাজ্য হলো শেফচাউইন।

মরোক্কোর টাঙ্গিয়ার এবং তাতোয়ান থেকেও ভেতরের দিকে শেফচাউইনের অবস্থিত। এ শহরটির বিশেষত্ত্ব হলো এর নীল রং। একটি শহরের দুই-তিনটি বাড়ি হয়তো কখনো একরঙা হতে পারে। তাই বলে পুরো শহরের সব বাড়ি এমনকি রাস্তা সবই নীল রঙে আচ্ছাদিত। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে শেফচাউইনে পর্যটকের আনাগোনা সবসময় লেগেই থাকে।

শেফচাউইন শহরটির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, ১৪৭১ সালে আবদুল-সালাম আল-আলামী এবং ইদ্রিস প্রথমের বংশধর মৌলে আলী আলী ইবনে রশীদ আল-আলামী এই শহরে একটি ছোট কাসবাহ (দুর্গ) প্রতিষ্ঠা করেন। আল-আলামি উত্তর মরক্কোর পর্তুগিজ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

Advertisement

মরোক্কোর নীল মুক্তো হিসেবে পরিচিত শেফচাউন শহরটি। শেফচাউনের ইউরোপীয় পর্যটকদের আগম বেড়ে যায় গ্রীষ্মকালে। পর্যটকদের থাকার জন্য ২০০ হোটেল আছে সেখানে। শেফচাউইনে গেলে আপনি খালি হাতে ফেরার কথা ভাবতেই পারবেন না।

কারণ শেফচাউইন শপিং গন্তব্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মরোক্কোর দেশীয় হস্তশিল্প শুধু শেফচাউইনেই পাওয়া যায়। যেমন- উলের পোশাক এবং বোনা কম্বল। এই অঞ্চলের ছাগলের পনির পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।

মরোক্কোর শেফচাউইনে গেলে আপনি দেখতে পাবেন কেফ টোগোবিট গুহা। যা আফ্রিকার গভীরতম গুহাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়াও সেখানকার নীলচে সৌন্দর্য পাগল করে সবাইকে। শেফচাউনের নীল দেয়ালগুলো বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে এর রহস্য কী?

শেফচাউইন শহরটি নীল হওয়ার কারণ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব আছে। একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব হরো নীল রং মশাকে দূরে রাখে। এ ছাড়াও বলা হয়, নীল আকাশ হলো স্বর্গের প্রতীক।

Advertisement

নীল রং মনকে শান্ত করে এবং আধ্যাত্মিক জীবনের অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। তবে স্থানীয়দের মতে, ১৯৭০ সালে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেই এ শহরের দেওয়ালগুলোর রং নীল করা বাধ্যতামূলক হয়েছিল।

শেফচাউনে গেলে আরও দেথবেন, সেখানকার সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহাসিক গ্রেট মসজিদ। যার অবস্থান উটা হাম্মামে। শহরের পূর্বদিকে একটি পাহাড়ের উপরে আছে ১৯২০ সালে স্প্যানিশ দ্বারা নির্মিত একটি মসজিদ। পাহাড়ের উপর উঠে এই মসজিদে গিলেই পুরো শহর এক ঝলে দেখা যায়।

জেএমএস/এএসএম