আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এই দিনে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বয়ে যাওয়া ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উপকূলের মানুষ দিনটিকে স্মরণ করছে।১৯৭০ সালের এই দিনে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সমগ্র উপকূলীয় এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ভোলার অধিকাংশ এলাকা। দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ লাখ মানুষ মারা যায় ওই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে।সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মু শওকাত হোসেন বলেন, তখন ছিল রমজান মাস, সকাল থেকেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ছিল। এখনকার মতো তথ্যপ্রযুক্তি উন্নত না থাকায় সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারেনি আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে তাদের কপালে। রাতের মাঝামাঝি সময়ে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঝড় এবং সাথে ২০-৩০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘুমের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ ভেসে যায় জলোচ্ছ্বাসে। পুরো উপকূলীয় এলাকা পরিণত হয় এক ধ্বংসস্তূপে। দিবসটি স্মরণ করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, সেই ভয়াল কালো রাতে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাস তেড়ে আসে। তখনকার দেশী-বিদেশী প্রচারমাধ্যমে এই ধবংসযজ্ঞের বর্ণনা ছিল এমন ‘মানুষের মৃতদেহগুলো কচুরিপানার মতো সমুদ্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে’। চার দিকে লাশ আর লাশ, লাশের গন্ধে মানুষ কাছে যেতে পারেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াল ধ্বংসযজ্ঞের পূর্ণাঙ্গ দলিল বা এ বিষয়ক কোনো পুস্তিকা আজো প্রকাশিত হয়নি। সেই দিনের ভয়াবহ দুর্যোগের কথা মনে পড়লে আজো এলাকার সাধারণ মানুষের মন ও পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। আঁতকে ওঠে উপকূলীয় এলাকার মানুষ।প্রতি বছর ১২ নভেম্বর এলেই নির্দিষ্ট কিছু সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে। এ ধরনের সংগঠনগুলো মিলাদ মাহফিল, কুরআনখানি ও নিহতদের স্মরণে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। তারা ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বরের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসের ফলে ১০ লাখ লোকের প্রাণহানির ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে ১২ নভেম্বরকে জাতীয় দুর্যোগ দিবস ঘোষণার দাবি জানান সরকারের কাছে।
Advertisement